দেশজুড়ে চর্চার মধ্যেই মঙ্গলবার উপরাষ্ট্রপতি পদে জগদীপ ধনখড়ের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আর এই আবহে জগদীপ ধনখড়ের উদ্দেশ্যে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। সোমবার রাতেই তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতির পাশাপাশি রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন। এখন তার পদত্যাগের ফলে এই দুটি পদই শূন্য হয়ে গেল।
আরও পড়ুন-মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণে মুক্ত ১২ অভিযুক্ত! খালাস রদে সুপ্রিম কোর্টে মহারাষ্ট্র সরকার
মঙ্গলবার বিজেপি সাংসদ ঘনশ্যাম তিওয়ারি জানান, উপরাষ্ট্রপতি পদে জগদীপ ধনখড়ের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সংবিধানের ৬৭এ ধারার অধীনে তাৎক্ষণিকভাবে ধনখড়ের পদত্যাগপত্র পৌঁছে দিয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে ধনখড় জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শেই উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং সাংসদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ধনখড়।
তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়াদকালে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা, সমর্থনের এবং দায়িত্বপালন করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছেন। ৭৪ বছর বয়সি ধনখড় আরও জানান, উপরাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তিনি ভারতের অসাধারণ অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন। এই উন্নয়নে যোগদান করতে পেরে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন।
উপরাষ্ট্রপতি পদে জগদীপ ধনখড়ের পদত্যাগের ঘোষণার পরে এক্স বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জগদীপ ধনখড়জি দেশের সেবা করার একাধিক সুযোগ পেয়েছেন। তিনি দেশের উপরাষ্ট্রপতি হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন। তাঁর সুস্থতা কামনা করছি।' এদিকে, উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে জগদীপ ধনখড়ের আচমকা ইস্তফা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলকে। স্বাস্থ্যে অবনতির কথা জানিয়ে ২১ জুলাই সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেন তিনি। সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনের এই ঘটনায় হতবাক বিরোধী দলগুলিও। সত্যিই কি ধনখড়ের এই পদক্ষেপের নেপথ্যে স্বাস্থ্যের অবনতি না অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। প্রশ্ন উঠছে ইস্তফার সময় নিয়েও। আচমকা ইস্তফার বিষয়টি খটকা তৈরি করেছে সকলের মনেই।
আরও পড়ুন-মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণে মুক্ত ১২ অভিযুক্ত! খালাস রদে সুপ্রিম কোর্টে মহারাষ্ট্র সরকার
ভারতীয় সংবিধান অনুসারে, যদি উপরাষ্ট্রপতি তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করেন, তাহলে তাঁর পদ পূরণের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে।নির্বাচন শূন্য হওয়ার তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। এই নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত, উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব, বিশেষ করে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান অথবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত রাজ্যসভার অন্য কোনও সদস্য দ্বারা পালন করা হয়। ২০২২ সালে আগস্ট মাসে উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন জগদীপ ধনখড়। বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে ৩৪৬ ভোটে হারিয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন তিনি। সোমবারও রাজ্যসভায় অধ্যক্ষ হিসাবে অধিবেশন পরিচালনা করেন ধনখড়। আর রাতেই ইস্তফার কথা জানালেন তিনি।তবে বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। গত মার্চ মাসে ৭৩ বছরের ধনখড়কে বুকে ব্যথা নিয়ে দিল্লির এইমসে ভর্তি করানো হয়। শুধু তাই নয়, গত মাসে কুমায়ুন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে আচমকা অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন তিনি।