গত বাদল অধিবেশনেই ব্রিটিশ জমানার সিআরপিসির বদলে 'ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা' কার্যকর করার জন্য সংসদে বিল পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সবরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই বিলটি পাঠানো হয় সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে। জানা গিয়েছে, সেই কমিটির তরফে এবার সুপারিশ করা হবে যাতে আর্থিক জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার সময় হাকড়া না পরানো হয়। উল্লেখ্য, এই স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধান হলেন বিজেপি সাংসদ ব্রিজ লাল। জানা যাচ্ছে, অভিযুক্তকে আটক করা নিয়ে পুলিশকে যে অধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সংহিতায়, তা সংশোধন করে স্পষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক তৈরির সুপারিশ করা হতে পারে।
উল্লেখ্য, আগের আইপিসি এবং সিআরপিসির বিধানগুলিকে আরও শক্তিশালী করে নয়া বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য লোকসভায় গত অগস্ট মাসে ৩টি বিল উত্থাপন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আইপিসি, সিআরপিসি এবং ভারতীয় এভিডেন্স অ্যাক্ট তুলে দিয়ে নয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতা কার্যকর করা হবে। এই তিন বিলের মাধ্যমে ৩১৩টি পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বিল তিনটি পাশ হলে দেশের আইন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। মহিলা এবং শিশু সুরক্ষার বিষয়ে বেশি নজর দিয়ে এই সব পরিবর্তন করা হয়েছে। অপরাধীদের সাজা নিশ্চিত করার বিষয়টি দেখা হয়েছে। এদিকে শাহ জানিয়েছিলেন, নয়া বিল কার্যকর হলে পুলিশ নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। নয়া বিধানে নাবালিকা ধর্ষণের দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হবে। এছাড়া গণধর্ষণের ক্ষেত্রে সাজা ২০ বছর থেকে আজীবন এবং গণধোলাইয়ের ক্ষেত্রে ১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড।
যে যে ধারায় ৭ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে ফরেনসিক দলকে অপরাধস্থলে যেতেই হবে। এদিকে ৯০ দিনের মধ্যেই চার্জশিট দাখিল করতে হবে পুলিশকে। শুধুমাত্র আদালত বললে তবেই চার্জশিট দাখিল করার জন্য আরও ৯০ দিন পাবেন তদন্তকারীরা। পুলিশকে এই নতুন আইনের অধীনে ১৮০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।
এদিকে ব্রিটিশ জমানার রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে বাতিল করবে সরকার। এর বদলে সন্ত্রাসবাদ এবং দেশদ্রোহিতা নিয়ে আরও কঠোর বিধান আনা হবে এই সংহিতায়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারার বদলে নয়া বিলে নয়া একটি বিধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহ, বা সন্ত্রাসবাদের প্রেক্ষিতে এই বিধানে বিচার হবে দোষীদের। সেই ক্ষেত্রে আজীবন কারাবাস হতে পারে দোষীর। প্রসঙ্গত, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারা বা রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা দায়ের করা হয় শীর্ষ আদালতে। এরপরই আইনটি স্থগিত করেছিল সুপ্রিম কোর্ট।