হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেল জঙ্গি নেতা হাফিজ আবদুল রহমান মাক্কির। তিনি ছিলেন মুম্বই হামলার অন্যতম মূলচক্রী এবং হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় (শ্য়ালক)। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানেই মৃত্যু হয়েছে ওই জঙ্গি নেতার।উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর (২৬/১১ মুম্বই হামলা) মুম্বইয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো হয়। পরবর্তীতে জানা যায়, এই হামলার অন্যতম মাস্টার মাইন্ড ছিলেন হাফিজ আবদুল রহমান মাক্কি। সেইসঙ্গে, তিনি ছিলেন নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী জামাত-উদ-দাওয়ার ডেপুটি চিফ এবং হাফিজ সইদের শ্য়ালক।পিটিআই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শুক্রবারই পাকিস্তানে হৃদরোগে আক্রান্ত হন মাক্কি। তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। জামাত-উদ-দাওয়া (জেইউডি)-এর পক্ষ থেকে সংবাদ সংস্থাকে জানানো হয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই নাকি অসুস্থ ছিলেন মাক্কি। তাঁর হাই ডায়বেটিস ছিল। যে কারণে লাহোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাও চলছিল তাঁর।জেইউডি-র এক প্রতিনিধি পিটিআই-কে এই প্রসঙ্গে বলেন, 'শুক্রবার সকালে মাক্কির একটি হ্য়ার্ট অ্যাটাক হয় এবং তিনি হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।'উল্লেখ্য, ২০২০ সালে একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন মাক্কি। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গি কার্যকলাপে আর্থিক সাহায্য করার অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়েছিল। তারই শাস্তি হিসাবে তাঁকে ছ'মাসের জন্য কারাবাসে পাঠানো হয়।কিন্তু, এই ঘটনার পর থেকেই ভীষণভাবে সচেতন হয়ে যান মাক্কি। খবরের শিরোনামে খুব একটা আসতে চাইতেন না তিনি। সাধারণের মতো জীবনযাপন করার চেষ্টা করতেন।তাঁর মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই 'পাকিস্তান মুতাহিদা মুসলিম লিগ' (পিএমএমএল)-এর তরফে বলা হয়, পাকিস্তানি আদর্শের প্রতীক ছিলেন হাফিজ আবদুল রহমান মাক্কি।তবে, পাকিস্তানের কট্টরপন্থীরা যাই বলুক না কেন, আন্তর্জাতিক মহলের কাছে হাফিজ আবদুল রহমান মাক্কি একজন জঙ্গি নেতা ছাড়া আর কিছুই ছিলেন না। ২০২৩ সালেই তাঁকে একজন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রসঙ্ঘ।যার জেরে তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ জারি করা হয়। সেইসঙ্গে, তাঁর বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করার উপরেও আন্তর্জাতিক মহলের তরফে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়। পাশাপাশি, তাঁকে অস্ত্র সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞারও অধীনে নিয়ে আসা হয়।প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতের বুকে অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো হয়েছিল। এই হামলায় সরাসরি মদত জুগিয়েছিল পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। পরে, সেকথা তারা স্বীকারও করেছিল।সেই হামলায় ভারতীয়দের পাশাপাশি বহু বিদেশি নাগরিকেরও মৃত্যু হয়েছিল। সব মিলিয়ে প্রাণ গিয়েছিল ১৬৪ জনের। হামলায় আহত হয়েছিলেন আরও অন্তত ৩০৮ জন। আন্তর্জাতিক মহলের তরফে এই হামলার তীব্র নিন্দা করা হয়েছিল সেই সময়ে।