ইজরায়েলি হামলায় ইরানের নাতানজ পরমাণু কেন্দ্রের পরীক্ষামূলক সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্ট ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (আইএইএ)-র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। বৃহস্পতিবার রাতে ইজরায়েলি বায়ুসেনার ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ তছনছ করে দিয়েছে ইরানের অন্তত ছ’টি পরমাণু ও সামরিক কেন্দ্র। দু’শো বোমারু ও যু্দ্ধবিমানের হানায় ইরান সেনার ‘চিফ অফ স্টাফ’ মেজর জেনারেল মহম্মদ বাগেরি, ‘ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড’ বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেন সালামি এবং ডেপুটি কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম আলি রশিদ নিহত হন।
আরও পড়ুন-'অন্য মহিলাকে খুন করে পোড়ানোর প্ল্যান ছিল সোনমদের, রাজাকে মেরে বোরখা পরে পালায়'
এই আবহে আইএইএয়ের ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি বলেছেন, 'ইরানি কর্তৃপক্ষ এখন আমাদের আরও দুটি পরমাণু কেন্দ্রে হামলার কথা জানিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- ফোর্দো জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র এবং এসফাহনের একটি কেন্দ্র। ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (আইএইএ)-র প্রধান জানিয়েছেন, নাতানজ পরমাণু কেন্দ্রের বাইরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অভ্যন্তরীণভাবে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হয়েছে। তবে আপাতত সাধারণ মানুষের কোনও বিপদের শঙ্কা নেই।
আইএইএ নিশ্চিত করেছে, নাতানজ ইজরায়েলের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল। এই কেন্দ্রটি তেহরানের প্রায় ২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। তবে স্থানটির বাইরে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা অপরিবর্তিত রয়েছে। আইএইএ বলেছে, ইজরায়েলের হামলায় ইরানের এসফাহন শহরের পারমাণবিক কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ফোর্দোতে অবস্থিত একটি পরমাণু জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টও এখন পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে। ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। অন্যদিকে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা এএওআইয়ের মুখপাত্র বেহরুজ কামালভন্দি বলেছেন, ‘অধিকাংশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপরিভাগে।’
আরও পড়ুন-'অন্য মহিলাকে খুন করে পোড়ানোর প্ল্যান ছিল সোনমদের, রাজাকে মেরে বোরখা পরে পালায়'
এদিকে, রবিবার ওমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ষষ্ঠ দফার আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। তবে বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ওমানে নির্ধারিত ষষ্ঠ দফার আলোচনা আদৌ শুরু হবে কিনা। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা আলোচনার টেবিলে ফিরে যাওয়ার আশায় আছি।’ বছরের পর বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমী সরকার বারবার ইরানের ওপর পরমাণু অস্ত্র অর্জনের অভিযোগ এনেছে, যা ইরান ক্রমাগত অস্বীকার করে আসছে। বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের ছয়জাতি আন্তর্জাতিক চুক্তির ৩.৬৭ শতাংশ সীমার অনেক ঊর্ধ্বে। তবে এটি এখনও পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশ সীমার নিচে রয়েছে।