করোনা সংক্রমণের জেরে চলতি বছরে রথ যাত্রায় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার তিনটি রথ টানতে যন্ত্র অথবা হাতি ব্যবহার করা হবে কি না, তা জানাতে রাজ্য সরকারের জবাব দাবি করল ওডিশা হাই কোর্ট।চলতি মাসের শেষ রথ যাত্রা। সেই উপলক্ষে অসংখ্য ভক্ত সমাগমের কথা মাথায় রেখে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে তৈরি হচ্ছে জগন্নাথক্ষেত্র ওডিশা। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে অগণিত ভক্তের রথের রশি টানার রীতি কেন্দ্র করে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে প্রশাসন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে হাই কোর্টে জনস্বার্থে আবেদন রুজু করেন আইনজীবী দিলীপ কুমার রায়। ওই আবেদনে আগামী ২৩ জুন রথা যাত্রা উপলক্ষে রথ টানার জন্য মানুষের বদলে যন্ত্র অথবা হাতি ব্যবহারের বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপের আর্জি জানানো হয়। তবে এই ব্যবস্থাতেও বেশ কিছু সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট।প্রতি বছর রীতি মেনে পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দির থেকে গ্র্যান্ড রোড ধরে আড়াই কিমি দূরত্বে গুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত যাত্রা করে জগন্নাথদেব, বলভদ্রদেব ও সুভদ্রাদেবীর কাঠের রথ। গোটা পথই রথ তিনটির রশি টেনে চলে অগণিত ভক্তের ভিড়। রবিবার প্রকাশিত ওডিশা হাই কোর্টের রায়ে প্রধান বিচারপতি মহম্মদ রফিক এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ মোহান্তির বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘মানুষের বদলে ভারী যন্ত্র অথবা হাতির সাহায্যে রথ টানতে গেলে বহু সংখ্যক মানুষকে নিয়োগের প্রয়োজন পড়বে। এই কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নির্দেশাবলী মেনে এ বছর ২৩ জুন রথ যাত্রা আয়োজন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্য সরকারকে।’উল্লেখ্য, গুন্ডিচা মন্দিরে ৮ দিন কাটানোর পরে নবম দিনে একই ভাবে ফিরতি পথে জগন্নাথ মন্দিরে ফিরে আসে তিন দেব-দেবীর রথ। ১৩,০০০ কিউবিক ফিট কাঠে তৈরি তিনটি রথের ওজন অত্যন্ত বেশি এবং সেগুলি টানতে প্রচুর লোকবলের প্রয়োজন হয়। জুন মাসের গোড়ায় পুরীতে জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রায় অবশ্য করোনা রোধ বিধি মেনে ভক্তদের উপস্থিতির উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ওডিশা সরকার। শুধুমাত্র যে সমস্ত পুরোহিতরা করোনা নেগেটিভ পরীক্ষিত হয়েছিলেন, তাঁরাই ওই অনুষ্ঠানে অশগ্রহণ করার অনুমতি পান।