প্রয়াত মিশরীয় ধনকুবের তথা ব্রিটেনের বিলাসবহুল পণ্য বিপণনী 'হ্যারডস'-এর প্রয়াত কর্ণধার মহম্মদ আল-ফায়েদের বিরুদ্ধে নতুন করে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ সংক্রান্ত তদন্ত শুরু করবে লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বুধবারই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে তাদের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
লন্ডন পুলিশের দাবি, তাদের হাতে আসা তথ্য অনুসারে, নিজের জীবদ্দশায় আল-ফায়েদ ১০০-রও নারীর উপর যৌন নির্যাতন করেছেন! হয় তিনি তাঁদের ধর্ষণ করেছেন, অথবা তাঁদের নানাভাবে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। এমন অন্তত ৯০ জন নিগৃহীতাকে পুলিশ এখনও পর্যন্ত চিহ্নিত করতে পেরেছে বলেও দাবি করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র তরফে গত সেপ্টেম্বর মাসে এই সংক্রান্ত একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচার করা হয়। তাতে অসংখ্য যৌন নির্যাতনের অভিযোগ সামনে আনে কর্তৃপক্ষ। এই সম্প্রচারের জেরেই লন্ডন পুলিশ নতুন করে এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের অগস্ট মাসে ৯৪ বছর বয়সে মারা যান মিশরীয় ধনকুবের মহম্মদ আল-ফায়েদ। এদিকে, তাঁর অবর্তমানে গত সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে নিয়ে করা তথ্যচিত্রটি সম্প্রচারিত হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৪০০-রও বেশি মহিলা এবং সাক্ষী প্রকাশ্যে এসেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
তাঁরা সকলেই আল-ফায়েদের বিরুদ্ধে যেমন যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন, তেমনই এত বছর ধরে পুলিশ যেভাবে ভূরি ভূরি অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সেগুলিকে যথাযথ গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে গিয়েছে, তারও সমালোচনা করেছেন।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে অসংখ্য মহিলা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন এবং তাঁরা সামনে এগিয়ে এসেছেন। সেই কারণেই এই ঘটনায় নতুন করে তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুলিশের তরফে এই সমস্ত তদন্তের জন্য একটি বিশেষ ইউনিটকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। একইসঙ্গে, আজ পর্যন্ত ওই ধনকুবেরের বিরুদ্ধে যতগুলি অভিযোগ উঠেছে, তার প্রত্যেকটি খতিয়ে দেখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, দ্য গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনায় এমন পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে আল-ফায়েদকে সাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ধনকুবেরকে তাঁর এই কুকীর্তি চালিয়ে যেতে সাহায্য করার বিনিময়ে ওই পাঁচ ব্যক্তিও বিশেষ কোনও সুবিধা লাভ করেছেন।
এছাড়াও, এত বছর ধরে এই বিষয়ে এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন যথাযথ তদন্ত হল না, এবার তাও খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। এক্ষেত্রে লন্ডন পুলিশের কোনও বর্তমান বা প্রাক্তন আধিকারিক কোনও অন্যায় করেছেন কিনা, তা জানতে এক বৃহত্তর তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে তারা।