লিভ-ইন সম্পর্ককে বিয়ে হিসাবে স্বীকৃতি দেয় না আইন। সম্প্রতি এটাই কেরল হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ। বার অ্য়ান্ড বেঞ্চের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, যখন উভয়ে একটি সাধারণ চুক্তির ভিত্তিতে পরস্পর বসবাস করতে শুরু করে সেটাকে স্পেশাল ম্য়ারেজ অ্য়াক্ট বা কোনও পার্সোনাল ল অনুসারে হয় না, তখন সেই একসঙ্গে বসবাস করাকে বিয়ে বলে দাবি করা যায় না। সেখানে ডিভোর্সও চাওয়া যায় না।
বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাক ও সোফি থমাসের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, লিভ ইন সম্পর্ক আইনগত সিদ্ধ নয়। পার্সোনাল ল বা স্পেশাল ম্য়ারেজ অ্য়াক্টে যদি কোনও বিয়েকে মান্যতা দেওয়া হয় তবেই কোনও সম্পর্ক আইনগত সিদ্ধ হয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিয়ে একটা সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এটা আইনগত সিদ্ধ।বৃহত্তর সমাজের সামাজিক ও নৈতিক ভাবধারা এর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। তবে লিভ-ইন সম্পর্ককে বিয়ে বলে আইন মান্যতা দেয় না। সেই সঙ্গেই আদালত জানিয়েছে, একটি আইনগত বিয়েকে বিচ্ছেদ করার জন্যই বিবাহ বিচ্ছেদ। আর লিভ-ইন রিলেশনশিপসটাকে অন্য কারণে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু এর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের কোনও ব্যাপার নেই।
আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, আমাদের দেশে বিবাহ বিচ্ছেদ একটা অদ্ভূত ব্যাপার। বিচার ব্যবস্থার বাইরে কিছু শ্রেণির মধ্য়ে যে বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যাপার রয়েছে তাতেও আইনগত কিছু ব্যাপার রয়েছে। ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটা?
একজন হিন্দু ও অপরজন খ্রীষ্টান। তারা একসঙ্গে থাকবে বলে ঠিক করেছিলেন। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁরা এনিয়ে চুক্তি করেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা স্বামী স্ত্রী হিসাবে ছিলেন। তাদের বাচ্চাও হয়। এদিকে বর্তমানে তারা ছাড়াছাড়ি চান। সেকারণে স্পেশাল ম্য়ারেজ অ্যাক্ট অনুসারে তারা ডিভোর্স চান। তবে পারিবারিক আদালত তাদের ডিভোর্স দিতে চায়নি। কারণ স্পেশাল ম্যারেজ অ্য়াক্টে তাদের বিয়ে হয়নি।
এরপর তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাদের পক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, যেহেতু দুজনেই বিষয়টিকে বিয়ে হিসাবে মেনে নিয়েছিলেন তখন আদালতের দেখার দরকার নেই ওটা বিয়ে ছিল কি না। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, যখন উভয়ে একটি সাধারণ চুক্তির ভিত্তিতে পরস্পর বসবাস করতে শুরু করে সেটাকে স্পেশাল ম্য়ারেজ অ্য়াক্ট বা কোনও পার্সোনাল ল অনুসারে হয় না, তখন সেই একসঙ্গে বসবাস করাকে বিয়ে বলে দাবি করা যায় না। সেখানে ডিভোর্সও চাওয়া যায় না। সেই সব ক্ষেত্রে পারিবারিক আদালতেরও এনিয়ে কিছু করার থাকে না।