যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরান থেকে আর্মেনিয়ায় স্থানান্তরিত ১০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে নিয়ে দিল্লিতে অবতরণ করল প্রথম বিমান ৷ ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতে মঙ্গলবার ভারতীয় দূতাবাসের 'অপারেশন সিন্ধু'-র আওতায় তেহরানে থাকা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের শহর থেকে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে ৷ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা জম্মু ও কাশ্মীরের ছাত্র-ছাত্রীরা কেন্দ্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। কিন্তু দিল্লি পৌঁছানোর পর যে বাসগুলি রাখা হয়েছে তাঁদের বাড়ি পাঠানোর জন্য, সেগুলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছে, 'ইরান থেকে চার দিনের ক্লান্তিকর যাত্রা শেষে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা দিল্লিতে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু এখানে আসার পর তাদের খুব খারাপ এসআরটিসি বাসে করে আসতে বলা হয়। অন্যান্য রাজ্যের শিক্ষার্থীরা আরও ভাল অভ্যর্থনা, যত্ন ও বিমান পেয়েছিল। এটাই কি কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ধৈর্য্যের প্রতিদান?' একজন ছাত্র বলেন, 'আমরা ভারত সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা কোনও সমস্যার সম্মুখীন হইনি, এখন আমরা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা তিন দিন ধরে এক দেশ থেকে দ্বিতীয় দেশে, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় দেশে ভ্রমণ করেছি। আমরা বাসে যেতে রাজি নই। বাসের অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করছি আমাদের জন্য এমন কিছু ব্যবস্থা করুন যাতে আমরা দ্রুত বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারি। তাঁরাও আমাদের জন্য চিন্তিত।'
আরও পড়ুন-আক্রমণের তেজ বাড়ছে! ইজরায়েলের হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের, হুঙ্কার নেতানিয়াহুর
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী পড়ুয়াদের কথা তিনি শুনেছেন। ভাল বাস যাতে দেওয়া হয়, তার যথাযথ ব্যবস্থা করা হচ্ছে।সরকার শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য পরিবহন কর্পোরেশনের মাধ্যমে আরও ভাল ডিলাক্স বাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এদিকে কাশ্মীরের এক ছাত্র ইয়াসির জাফর বলেন, 'গত দু'দিন ধরে ইরানের পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এখন উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীদের সরিয়ে আনা এখন আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।' পড়ুয়াদের প্রত্যেকেই খুব খুশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তা ভেবে।
আরও পড়ুন-আক্রমণের তেজ বাড়ছে! ইজরায়েলের হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের, হুঙ্কার নেতানিয়াহুর
ইরানের উর্মিয়া মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১১০ জন ভারতীয় শিক্ষার্থীকে সরিয়ে প্রথমে আর্মেনিয়া, তারপর দোহা হয়ে দিল্লিতে আনা হয়। এরমধ্যে ৯০ জনই কাশ্মীরের বাসিন্দা। ইরানে পড়াশোনার খরচ তুলনামূলক কম, তাই কাশ্মীরের পড়ুয়ারা ইরানকেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেছে নেন। বর্তমানে ইরানে প্রায় ৪০০০ ভারতীয় পড়াশোনা করছেন। তাঁদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা।