চিনের সাংহাই থেকে টোকিও যাওয়ার জাপান এয়ারলাইন্সের বিমানে ভয়ঙ্কর কাণ্ড। বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেন যাত্রীরা। মাঝ-আকাশে হঠাৎ জাপান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭ বিমান ২৬ হাজার ফুট নিচে নেমে আসে। তুমুল আতঙ্কের মধ্যে যাত্রীদের দিতে হয় অক্সিজেন মাস্ক।
জানা গিয়েছে, গত ৩০ জুন চিনের সাংহাই পুডং বিমানবন্দর থেকে টোকিও নারিতা বিমানবন্দরের উদ্দেশে বিমানটি যাত্রা শুরু করে। বিমানে ছিলেন ১৯১ জন যাত্রী এবং ক্রু সদস্যরা। জাপান এয়ারলাইন্স এবং এর সাশ্রয়ী সহযোগী সংস্থা স্প্রিং জাপানের মধ্যে একটি কোড শেয়ার চুক্তির অধীনে পরিচালিত বিমান। গত সোমবার কানসাই বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে বিমানটি। কারণ মাঝ আকাশেই বিমানটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা যায়। যার জেরে ১০ মিনিটের মধ্যে বিমানটি প্রায় ৩৬ হাজার ফুট থেকে ১০,৫০০ ফুট উচ্চতায় নেমে আসে। এর ফলে যাত্রীদের মধ্যে তুমুল আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।তড়িঘড়ি যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় অক্সিজেন মাস্ক। আর এতে অনেকেই ভেবে বসেন যে বিমানটি শীঘ্রই ক্র্যাশ করতে চলেছে। তবে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল মূলত বাতাসের চাপের মাত্রার বদলে কারও যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেই জন্য।
আরও পড়ুন-তরুণদের হার্ট অ্যাটাকের নেপথ্যে কোভিড টিকা? স্পষ্ট করল স্বাস্থ্যমন্ত্রক
পরে বিমানবন্দরে নিরাপদে বিমানটি ল্যান্ড করার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক যাত্রী এই অভিজ্ঞতাকে 'প্রাণের ঝুঁকি' বলে দাবি করেছেন। এক যাত্রী লিখেছেন, 'আমার শরীর এখনও এখানে আছে, কিন্তু আমার আত্মা কিছুক্ষণ সাড়াও দেয়নি। আমার পা এখনও কাঁপছে। আপনি মৃত্যুর মুখোমুখি হলে অন্য সব কিছু তুচ্ছ মনে হয়।'আবার অন্য এক যাত্রী বিমানের অবতরণের ঘটনাকে আকস্মিক বলে ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন যে সন্ধে সাতটার দিকে বিমানটি হঠাৎ করে নিচে নামতে শুরু করে এবং মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই তা ৩ হাজার মিটার নিচে নেমে যায়। সূত্রের খবর, বিমানের এক যাত্রী সেই সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে উইল লিখতে শুরু করেছিলেন। নিজের বিমা ও ব্যাঙ্কের পিন লিখে পাঠানোর চেষ্টা করছিলেন।
আরও পড়ুন-তরুণদের হার্ট অ্যাটাকের নেপথ্যে কোভিড টিকা? স্পষ্ট করল স্বাস্থ্যমন্ত্রক
তবে ওসাকাতে বিমান অবতরণের সময় কোনও যাত্রীর আহত বা আঘাতের খবর পাওয়া যায়নি। বিমানে থাকা ব্যক্তিদের পরিবহন ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫ হাজার ইয়েন অর্থাৎ ১০৪ ডলার করে দেওয়া হয়। এমনকী এক রাতের থাকার ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয় সকলকে। কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল তা জানার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার জরুরি অবতরণের সঙ্গে জড়িত বোয়িং ৭৩৭ সিরিজের বিমানটি বিশ্বব্যাপী অসংখ্য নিরাপত্তা জনিত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় জেজু এয়ারের একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমান ধ্বংস হয়ে যায়। এই ঘটনায় মোট ১৭৯ জন মারা যান এবং মাত্র দুজন ক্রু সদস্য প্রাণে বেঁচে যান।