ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিল্পপতির মেয়েকে বেআইনিভাবে জেলে ঢোকানোর অভিযোগ উঠল উগান্ডা সরকারের বিরুদ্ধে। এরই প্রতিবাদে এবং তাঁর মেয়েকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে সরাসরি উগান্ডার প্রেসিডেন্টকে খোলা চিঠি লিখেছেন ওই শিল্পপতি।
শিল্পপতি মহলে যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে পঙ্কজ ওসওয়ালের। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও বর্তমানে সুইৎজারল্যান্ডের নাগরিক। তাঁর অভিযোগ, তাঁর মেয়ে ২৬ বছরের বসুন্ধরা ওসওয়ালকে উগান্ডায় বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেই দেশেই হাজতবাস করছেন।
এমনকী, কারাগারের অন্দরে বসুন্ধরাকে তাঁর মৌলিক অধিকারগুলি থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পঙ্কজ। তাঁর দাবি, তাঁর মেয়েকে নিজের আইনজীবী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
পঙ্কজের আরও দাবি, তাঁর মেয়ে, অর্থাৎ পিআরও ইন্ডাস্ট্রিজের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর বসুন্ধরা ওসওয়ালকে আদালতেও পেশ করা হয়নি। বদলে গত ১ অক্টোবর থেকে তাঁকে উগান্ডার জেলে আটকে রাখা হয়েছে। এই ঘটনার নেপথ্যে 'কর্পোরেট এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র' রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পঙ্কজ।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওই শিল্পপতির আরও দাবি, তাঁদেরই সংস্থার এক প্রাক্তন কর্মীর মিথ্য়া অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর মেয়েকে এভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। এমনকী, যে কর্মী এই অভিযোগ এনেছেন, তিনি নিজেই অতীতে ওসওয়ালদের সংস্থা থেকে মূল্যবান সামগ্রী চুরি করেছেন এবং তাঁদের কাছ থেকে মোটা টাকা ঋণ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন পঙ্কজ।
মেয়েকে মুক্ত করতে আন্তর্জাতিক মহলেরও দ্বারস্থ হয়েছেন পঙ্কজ ওসওয়াল। তিনি ইতিমধ্য়েই রাষ্ট্রসংঘের সংশ্লিষ্ট কার্যনির্বাহী শাখার মাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েকে অত্যন্ত অপমানজনক পরিস্থিতি মধ্যে রেখে জেরা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, তাঁকে তাঁর আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এবং শুনানি ছাড়াই ৯০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকে রাখা হয়েছে।
পঙ্কজের আরও অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট আদালত ইতিমধ্য়েই বসুন্ধরাকে নিঃশর্তভাবে মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। তারপরও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তাঁকে জেলের ভিতরে রাখতে মরিয়া। এর জন্য তারা বসুন্ধরার নামে একটির পর একটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনছে।
এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন বসুন্ধরার মা রাধিকা ওসওয়াল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, 'যেকোনও মায়ের কাছেই এটা দুঃস্বপ্নের মতো। আমার তরুণী মেয়েকে বিদেশের জেলের ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তার অসম্মান করা হচ্ছে। আমার মেয়ে সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমি শুধু চাই, ও নিরাপদে আমার বুকে ফিরে আসুক।'