রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। এসবের মধ্য়েই রবিবার বাংলাদেশের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে দুর্নীতির কারণে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে। এই দুর্নীতির কারণে স্থল, জলসীমাসহ সীমান্তের নানা রুট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আটকানো কঠিন হচ্ছে। জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশ দফতরের উপদেষ্টা। খবর প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, সাংবাদিকরা বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টার কাছে গত দুই মাসে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে নতুন করে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে তা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের নীতিগতগভাবে অবস্থান ছিল আমরা কোনও রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেব না। তবে পরিস্থিতি কখনও কখনও এমন দাঁড়ায় যে আমাদের আর কিছু করার থাকে না। সেই রকম পরিস্থিতিতে আমরা ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দিয়েছি। আনুষ্ঠানিকভাবে যে তাঁদের ঢুকতে দিয়েছি তাও নয়। তারা বিভিন্ন পথে ঢুকেছেন।’
সেই সঙ্গেই সীমান্তের দুর্নীতির প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আর একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে প্রচুর দুর্নীতি আছে সীমান্তে। এটা সত্যি। এটা অস্বীকার করার কোনও অর্থ নেই। দুর্নীতির মাধ্যমে ( রোহিঙ্গারা) প্রচুর ঢুকে যাচ্ছে। নৌকা নিয়ে ঢুকছে। একটা সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে বিষয়টা এমন নয়। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে যে ঢুকছে এটা আটকানো খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাও আমি মনে করি না যে আবার একটা ঢল আসবে। যদিও অনেকে আশঙ্কা করছেন। এই আশঙ্কা আমাদেরও আছে। তবে সেই ঢলকে আটকানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়েই। জানিয়েছেন বিদেশ উপদেষ্টা বাংলাদেশের।’ খবর ওই প্রতিবেদন অনুসারে।
তিনি বলেন, ‘এখন বয়স্ক রোহিঙ্গা যারা আছেন তারা হয়তো পরিস্থিতি মেনে নেবেন। তবে আগামী ৫ বছর পরে যেসব তরুণ রোহিঙ্গার বয়স ২০ বছর হবে তাঁরা বেপরোয়া হয়ে উঠবেন। তখন আমাদের সমস্যা বেশি হবে ঠিকই তবে সেই সমস্যা প্রত্যেকেরই হবে। এর মধ্য়েই নৌকায় রোহিঙ্গারা অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত চলে গিয়েছেন।’
এদিকে থাইল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গত বৃহস্পতিবার ব্যাংককে ৬ দেশের মধ্য়ে আনুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে মায়ানমারের বিদেশমন্ত্রী থান সোয়ে ছিলেন। সেই বৈঠক প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘তাঁকে( সান থোয়ে) বলেছি মায়ানমার সীমান্তে তো তোমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। সীমান্ত তো রাষ্ট্র বহির্ভূত শক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। রাষ্ট্র হিসাবে তো আমরা নন স্টেট অ্যাক্টরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি না। তাদের দেখতে হবে কোন পদ্ধতিতে সীমান্ত ও রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে।’