গত মঙ্গলবার হাথরাসে ভোলে বাবা ওরফে সুরজপাল সিং-এর ধর্মীয় সমাবেশে পদদলিত হয়ে ১২১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। ঘটনার তদন্তে গঠিত বিচারবিভাগীয় কমিশন প্রথমবার স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতি রেকর্ড করেছে। ৩৪ জন ব্যক্তির মধ্যে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ভোলে বাবার নির্দেশে সমাবেশ শেষে তাঁর পায়ের মাটি সংগ্রহ করতে গিয়ে এই ভয়াবহ পদদলনের ঘটনা ঘটে।
হাথরাসের বাসিন্দা দেব চৌধুরী বলেন, ‘বাবা যখন ভক্তদের পায়ের মাটি সংগ্রহ করতে বললেন, তখনই পদপিষ্ট হওয়া শুরু হয়। নিরাপত্তা ও স্বেচ্ছাসেবকদের অনুপস্থিতি ছিল স্পষ্ট। মাইক্রোফোনে বাবা অনুরোধ করলে হয়তো পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হত না।’
অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীরা 'সেবাদার'দের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তারা ভক্তদের সরিয়ে ভোলে বাবার কনভয়ের রাস্তা পরিষ্কার করছিল। অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী ব্রিজবিহারী কৌশিক বলেন, ‘যথেষ্ট পুলিশ বাহিনী না থাকার ফলে মৃত্যুর সংখ্যা এত বেশি হয়েছে।’ তবে বেসরকারি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েও আযোজকদের একহাত নেন তিনি।
আরও পড়ুন। মোদীর চালে বড় কূটনৈতিক জয় ভারতের, রুশ সেনায় নিযুক্ত ভারতীয়দের দেশে ফেরাবেন পুতিন
অবসরপ্রাপ্ত এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি ব্রিজেশ কুমার শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনটি প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতি গ্রহণ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তাঁরা ঘটনাস্থলে উপস্থিতি, ঘটনার ক্রম এবং আহত ও মৃতদের হাসপাতালের পরিষেবা, এ সবই তাঁরা পরীক্ষা করে দেখছেন। প্রশাসন ও পুলিশের ভূমিকা পর্যালোচনা করে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চালাচ্ছেন।
বিবৃতি রেকর্ড করার আগে কমিশনের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার হেমন্ত রাও এবং ভাবেশ কুমারও সাক্ষীদের পরিচয় এবং ঘটনার সঙ্গে সংযোগের বিষয়টি যাচাই করেন। তদন্তে ঘটনাস্থলের পরিবেশ, ঘটনার ক্রম এবং দায়ীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত ছিল। শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন যে, শীঘ্রই একটি পাবলিক নোটিশ জারি করা হবে যাতে বাসিন্দা এবং সাক্ষীরা প্রমাণ ও বিবৃতি জমা দিতে পারবেন।
শ্রীবাস্তব বলেন, ‘আমরা পুরো ঘটনাটি পর্যালোচনা করছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ভিড়ের ধারণক্ষমতা পরীক্ষা করেছি এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করেছি। বিবৃতি রেকর্ড করা হচ্ছে। তদন্তের সময়, যাদের প্রয়োজন তাদের বিবৃতি রেকর্ড করতে ডাকা হবে, স্থানীয় প্রশাসনও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।’