কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট পেশ করে ১২ লক্ষ টাকা আয় পর্যন্ত কর দিতে হবে না বলে ঘোষণা করেছেন। আর গোটা দেশে কতজন মানুষ মাসে ১২ লক্ষ টাকা বছরে আয় করেন তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তাই একের পর এক তোপ দাগছেন বিরোধীরা। এই সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেছে নেন নয়াদিল্লির আরকে পুরম রোডকে। এখানে আজ তিনি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার করতে আসেন। আর এখান থেকেই মোদীর দাবি, মধ্যবিত্তের জন্য এটাই সবচেয়ে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ বাজেট। ১২ লক্ষ পর্যন্ত বার্ষিক আয় হলে মানুষের উপর আর করের বোঝা চাপবে না। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে টেনে আনলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর প্রসঙ্গ।
এদিকে রবিবার দিল্লির এই জনসভায় বাজেট নিয়ে বলতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী আবার নেহরু–ইন্দিরাকে একসারিতে নিয়ে এসে আক্রমণ শানালেন। আর কেন্দ্রীয় বাজেটকে ‘জনগণের বাজেট’ বলে সংসদেই উল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আজ, রবিবার দিল্লির এই জনসভায় বাজেট নিয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, এই বাজেটে মধ্যবিত্তরা উপকৃত হবেন। কিন্তু সত্যিই কি তাই? সংশয়ে রয়েছে বিরোধী দলগুলি এবং দেশের মানুষও। এখানেই নরেন্দ্র মোদীর কটাক্ষ, ‘জওহরলাল নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কারও বার্ষিক আয় ১২ লক্ষ টাকা হলে উপার্জনের এক চতুর্থাংশ কর দিতে হতো। আর ইন্দিরাজির সময়ে ১২ লক্ষ টাকার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকাই হয়তো কর দিতে চলে যেত। ১০ থেকে ১২ বছর আগেও কংগ্রেস সরকারের আমলে আপনার আয় ১২ লক্ষ টাকা হলে কর দিতে হতো ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু গতকালের বাজেটের পর বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা আয় হলে একটা টাকাও কর দিতে হবে না আপনাকে। স্বাধীনতার পর ভারতে এত বড় কর ছাড় কখনও মেলেনি।’
কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, আগে তো ১২ লাখ টাকা বছরে আয় থাকতে হবে। তবে তো আয়করে ছাড়। আয় না থাকলে আয়কর ছাড়ের মানে কী? বাজেট পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, ‘সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার বেতনভোগীদের বছরে ১২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ে শূন্য রাখা হয়েছে করের পরিমাণ।’ বিরোধীরা যখন এই নিয়ে সমালোচনা করছে তখন গোটা বিষয়টি ঘুরিয়ে দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ‘স্বাধীনতার পরে যাঁরা ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতেন, তাঁরা করের হাত থেকে কখনও এত ছাড় পাননি। কিন্তু বিজেপি সরকারের আমলে তা হবে না। শনিবারের বাজেটেই তা স্পষ্ট হয়েছে।’ যদিও এই বাজেটে কতটা উপকার হয় তা সময়ই বলবে।
আরও পড়ুন: অমর একুশে বইমেলা–২০২৫ উদ্বোধন করলেন মহম্মদ ইউনুস, শেখ হাসিনার ছবি ডাস্টবিনে