দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ‘কিং’ বা রাজা বলা হয়। কিন্তু আজ সেই রাজার রাজ্যপাট যেন ওলট-পালট হয়ে গেল। ওড়িশার বালাসোরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ল আপ ১২৮৪২ আপ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। কীভাবে ঠিক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। তবে দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই মারাত্মক ছিল যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫ টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। তার জেরে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে ১২৮৬৪ SMVT বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়িও। ওড়িশা সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২০৭ জনের। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯০০ যাত্রী।
তবে এই প্রথম দুর্ঘটনায় পড়ল না করমণ্ডল এক্সপ্রেস। অতীতে এই ওড়িশায় একাধিকবার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ‘কিং’। যে ট্রেনে চেপে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রচুর মানুষ চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ে যান। এমনকী বাংলাদেশের মানুষরাও সেই ট্রেনে করে দক্ষিণ ভারতের শহরে গিয়ে থাকেন। অনেকে আবার কর্মসূত্রে চেন্নাইয়ে যেতে সেই ট্রেন ব্যবহার করে থাকেন। যে ট্রেন আগে হাওড়া থেকে ছাড়ত। বর্তমানে শালিমার থেকে ছাড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident Live Updates: 'করমণ্ডল বিভাষিকীয় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২০৭, আহত ৯০০'
করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার ইতিহাস
১) ২০০২ সালের ১৫ মার্চ: অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলার কাছে হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাতটি কোচ। আহত হয়েছিলেন প্রায় ১০০ জন যাত্রী।
২) ২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারির রাতে জাজপুরে লাইনচ্যুত হয়েছিল আপ হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই ঘটনায় ১৬ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন ১৬১ জন যাত্রী। ইস্ট-কোস্ট রেলের তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার অজয়কুমার গোয়েল জানিয়েছিলেন, জাজপুর রোডের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৩ টি কোচ লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছিল। দুটি স্লিপার কোচ ছিল। দুটি ছিল জেনারেল কোচ। ট্রেনের ইঞ্জিনও উলটে গিয়েছিল।
৩) ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ওড়িশার লিঙ্গরাজ স্টেশনের কাছে চেন্নাই-হাওড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একটি কোচে আগুন ধরে গিয়েছিল। ইস্ট-কোস্ট রেলের এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, ইঞ্জিনের পর যে দু'নম্বর কোচ (জেনারেল কোচ) ছিল, তাতে আগুন ধরেছিল। তবে বড় কোনও বিপদ হয়নি। অন্য কোচে ছড়িয়ে পড়ার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছিল।
৪) ২০২৩ সালের ২ জুন: ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে যায় আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। লাইন থেকে ছিটকে যায় একের পর এক বগি। সবমিলিয়ে ১৫ টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। সেইসঙ্গে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে ১২৮৬৪ SMVT বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ি।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক