হিংসা কবলিত মণিপুরের ছ'টি থানা এলাকায় ১৯৫৮ সালের বিতর্কিত সশস্ত্র বাহিনী (বিশেষ ক্ষমতা) আইন বা আফস্পা পুনর্বহাল করল কেন্দ্রীয় সরকার।
বৃহস্পতিবার এই মর্মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে একটি বিবৃতি পেশ করা হয়। তাতে জানানো হয়েছে, মণিপুরের পাঁচটি জেলা - যথা - ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, জিরিবাম, কাঙ্গোপোকপি এবং বিষ্ণুপুরের - ছ'টি থানা এলাকাকে 'উপদ্রুত এলাকা' হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবং এই এলাকাগুলিতে আফস্পা বলবৎ করা হয়েছে।
তথ্য বলছে, এই নির্বাচিত এলাকাগুলিতে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক জাতি দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, বর্তমানে এই এলাকাগুলির পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কারণ, সেখানে জাতি দাঙ্গা অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে হিংসাত্মক সংঘাতের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সেসব নিয়ন্ত্রণে আনতেই আফস্ফা পুনরায় কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মোদীর শাসনকালে আফস্পার আওতাধীন এলাকার প্রথম বিস্তার:
ইম্ফল পশ্চিম জেলার সেকমাই ও ল্যামসাং, ইম্ফল পূর্ব জেলার লামলাই, জিরিবাম জেলার জিরিবাম, কাঙ্গোপোকপি জেলার লেইমাখোং এবং বিষ্ণুপুর জেলার মোয়রাং এলাকায় আফস্পা প্রত্যাহার বা তার পুনর্বহাল করার বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এবং তার পিছনে নানা কারণ রয়েছে।
এক্ষেত্রে বলে রাখা দরকার, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এই প্রথম কোনও রাজ্যে আফস্পার অধীনস্ত এলাকা বাড়ানো হল।
বস্তুত, মোদী জমানায় গত প্রায় এক দশকে আফস্পার অধীনে থাকা এলাকাগুলির পরিধি যথেষ্ট পরিমাণে কমানো হয়েছে।
এছাড়া, এত দিন মণিপুরে আফস্পার মেয়াদ বাড়ানো সংক্রান্ত যে কোনও বিজ্ঞপ্তি রাজ্য সরকারের তরফেই প্রকাশ করা হত। এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সেই দায়িত্ব পালন করল।
লক্ষ্যণীয় বিষয় আরও রয়েছে। রাজ্যের যেসমস্ত এলাকায় আফস্পা পুনরায় বহাল করার কথা বলা হয়েছে, সেগুলি মূলত মেইতি জনজাতি অধ্যুষিত।
তাছাড়া, এবার আফস্পার পরিসর বাড়ানো সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা বা বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, সেটি আগের বিজ্ঞপ্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জারি করা হল।
এই ঘটনাটিও অন্যরকম বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এর আগে যে মণিপুরে আফস্পা সংক্রান্ত যে বিজ্ঞপ্তি কার্যকর করা হয়েছিল, তার মেয়াদ ছিল গত ১ অক্টোবর (২০২৪) থেকে আগামী ৩০ মার্চ (২০২৫) পর্যন্ত।