বিহারের রাজধানী পাটনায় ব্যবসায়ী-বিজেপি নেতাদের লক্ষ্য করে একের পর এক খুনের ঘটনায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। শেখপুরায় এলাকায় ফের এক বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।এর আগে গত ৪ জুলাই রাতে আরেক প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ও বিজেপি নেতা গোপাল খেমকাকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে রাজ্যে এই ঘটনা ঘিরে ফের শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর,নিহত বিজেপি নেতার নাম সুরেন্দ্র কেওয়াত। তিনি আগে বিজেপি কিষাণ মোর্চার নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নিজের জমিতে কাজ করছিলেন।সেই সময় দুই অজ্ঞাত পরিচয় বাইক আরোহী এসে সুরেন্দ্রকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।রক্তাক্ত অবস্থায় বিজেপি নেতা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে, সেখান থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এদিকে, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। গুরুতর আহত অবস্থায় বিজেপি নেতাকে উদ্ধার করে এইমসে ভর্তি করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় তাঁর। এরপরেই বিধায়ক গোপাল রবিদাস এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যাম রজক হাসপাতালে গিয়ে নিহত বিজেপি নেতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করেন।
ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখছে তারা। ফরেনসিক দল ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের শনাক্ত বা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্তদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনাটি ঘটেছে এক সপ্তাহের মাথায়। কিছুদিন আরেক ব্যবসায়ী ও বিজেপি নেতা গোপাল খেমকাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। খেমকা হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল গান্ধী ময়দান থানার অন্তর্গত টুইন টাওয়ার এলাকার প্যানাশ হোটেলের সামনে।পাটনা পুলিশ এই দুটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে। দুই ঘটনাতেই পদ্ধতির মিল থাকায় পুলিশের সন্দেহ, এটি কোনো অপরাধচক্রের কাজ হতে পারে। এরা টার্গেট করে ব্যবসায়ীদের উপর হামলা চালাচ্ছে।
এদিকে, এক সপ্তাহের মধ্যে দুইজন বিজেপি নেতা খুন। একদিকে গোপাল খেমকার মতো প্রভাবশালী রাজনৈতিক-ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব, অন্যদিকে বিজেপি নেতা। এই ধরণের ধারাবাহিক ঘটনায় নীতীশ কুমার সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধী দলগুলি। এক্স পোস্টে বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব বলেন, 'এবার পাটনায় এক বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে! কী বলব, আর কাকে বলব? এনডিএ সরকারের কেউ কি সত্য শুনতে বা তাদের ভুল স্বীকার করতে ইচ্ছুক?সবাই মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের কথা জানে, কিন্তু দুই অকেজো বিজেপির উপ-মুখ্যমন্ত্রী কী করছেন?' পাল্টা জবাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঝি রাজ্য সরকারকে কলঙ্কিত করার জন্য আরজেডির বিরুদ্ধে অপরাধীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, 'বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে অপরাধীদের আর আপ্যায়ন করা হয় না। তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলার ক্ষেত্রে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদের এটা বোঝা উচিত।'