মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বাংলাদেশের শীর্ষ করদাতা হাজী মোহাম্মাদ কাউছ মিয়া। বিগত ১৫ বছর ধরে টানা শীর্ষ করদাতা হিসাবে সম্মানিত হয়েছেন এই ব্যক্তি। ওপার বাংলার বিখ্যাত হাকিমপুরী জর্দার মালিক ছিলেন কাউছ মিয়া, বেশ কয়েকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। দু'দিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে। এরপর সোমবার রাত পর্যন্তই ছিল ইহলোকে ঢাকার এই জর্দা ব্যবসায়ীয় শেষ দিন। এদিনই আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছিল তাঁকে।
৯০ বছর পেরিয়ে গেলেও, মনের অদম্য জোর ছিল অটুট। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। কিন্তু শেষমেশ বার্ধক্য চেপে ধরেছিল তাঁকে। কাউছ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর মিয়া জানিয়েছেন, চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কাউছ মিয়াকে। এরপর সেখান থেকে ফিরে এসেছিলেন তিনি। যদিও সুস্থ হয়ে ওঠা হয়নি। ফেরার পরে পুরাতন ঢাকার আরমানিটোলার বাড়িতে শয্যাশায়ী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন দিব্যি। হঠাৎ শনিবার সবটা হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। শারীরিক অবস্থার হয়ে পড়ায়, তাঁকে আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল পরিবার। এরপর, সোমবার রাত ১টা নাগাদ ইহলোক ত্যাগ করেছেন হাজী মোহাম্মাদ কাউছ মিয়া।
কাউছ মিয়ার ভরা সংসার। পরিবারে, স্ত্রী এখনও জীবিত। ৮ জন ছেলে রয়েছেন এবং ৮ জন মেয়েও রয়েছেন। কাউচ মিয়ার জন্ম হয়েছিল চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে। বরাবরই সাদা মাটা মানুষ ছিলেন। দেশের সর্বোচ্চ করদাতা হওয়া সত্ত্বেও, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, অত্যাধুনিক কামরার বদলে নিজের কারখানারই একটি সাধারণ কক্ষ নিজের ব্যবসার কাজের জন্য বেছে নিয়েছিলেন তিনি। হাকিমপুরীর জর্দার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করতেন তিনি। পুরাতন ঢাকার আগা নওয়াব দেউড়ি রোডে হাকিমপুরী জর্দার কারখানাতেই বসতেন।
কবে থেকে কর দিয়ে আসছেন কাউচ মিয়া
২২ বছর বয়স থেকে ব্যবসা শুরু করেছিলেন কাউছ মিয়া। এরপর ১৯৫৮ সাল থেকে কর দিয়েছেন কাউছ মিয়া। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানেও এক নম্বর করদাতার খেতাব পেয়েছিলেন কাউছ মিয়া। এরপর থেকে গত ১৫ বছর তিনিই হয়েছেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ করদাতা। তাঁর এমত করদানের প্রসঙ্গে একদিন জানিয়েছিলেন, যেখানে সেখানে টাকা রেখে চিন্তা বাড়ানোর থেকে, ব্যাঙ্কে সমস্ত জমিয়ে রাখা ভালো। এতে ফ্রি মনে ভালো থাকা যায়।