সানিয়া জৈন
কানাডার ক্যালগেরিতে ভিড়ে ঠাসা রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে এক নারীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে সেই সময় পাশাপাশি থাকা লোকজন সহায়তা করেননি বলে অভিযোগ। মর্মান্তিক এই হামলার ফুটেজ অনলাইনে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে। ক্যালগেরির সিটি নিউজ এভরিহোয়্যার জানিয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তায় আধা ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ভারতীয় ওই নারীকে সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানানোর ভিডিওটি অনলাইনে ক্ষোভ ও বর্ণবাদের অভিযোগ তুলেছে।
রবিবার কানাডার ক্যালগেরির সিটি হল/বো ভ্যালি কলেজ স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারীর কাছে যান ব্রাইডন জোসেফ জেমস ফ্রেঞ্চ নামের এক ব্যক্তি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি মহিলার জলের বোতল কেড়ে নিয়ে তাঁর মুখে জল ছিটিয়ে দেন। ফ্রেঞ্চ তখন তার জ্যাকেটটি ধরে এবং ট্রানজিট শেল্টারের দেয়ালে যেখানে তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে তাকে বারবার আঘাত করে। প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দেওয়ার সময় ওই ব্যক্তি মহিলার কাছ থেকে ফোনটাও চেয়ে নিয়েছিলেন।
অনলাইনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ওই নারীকে চিৎকার করতে শোনা যায়। ফ্রেঞ্চ শেষ পর্যন্ত তার ফোন ছাড়াই চলে যায়, মহিলাকে পুলিশকে কল করার সুযোগ দেয়। এদিকে, হামলার প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন ব্যক্তি আশপাশে জড়ো হলেও হামলাকারীকে থামাতে বা ওই নারীকে কোনোভাবে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসেনি।
ভিডিও
হামলার ভিডিওটি টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামের মতো বেশ কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা হয়েছিল। এই হামলার পেছনে জাতিগত কোনও বিদ্বেষ রয়েছে কি না সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
দ্য কানাডা পাঞ্জাবি নামে একটি ইনস্টাগ্রাম পেজ ফুটেজটি শেয়ার করে জানতে চেয়েছে কেন কেউ মহিলাকে সাহায্য করেনি।
‘মজার ব্যাপার হলো, পুরো কথোপকথনটাই এখন হবে যে উল্টোটা যদি হত তবে সেক্ষেত্রে নির্বাসন করা হত। যে অপরাধ করে, সে সময় করে। উভয় প্রান্তে ন্যায্য,’ একজন ইনস্টাগ্রাম মন্তব্য করেছেন।
' আরেকজন লিখেছেন, 'যেসব ভারতীয়রা কানাডায় জীবনের পেছনে ছুটছেন, তাদের সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ ধরনের ভিডিও দেখা উচিত।
ব্র্যাডন জোসেফ জেমস ফ্রেঞ্চকে মুখ লুকানোর জন্য হুডি টেনে প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। সিটি নিউজের খবরে বলা হয়, হামলার ২৫ মিনিট পর পুলিশ তাকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে ক্যালগারি পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীকে ইস্ট ভিলেজ থেকে আটক করা হয়েছে।
সিপিএস ডিস্ট্রিক্ট-১ কমান্ডার ইন্সপেক্টর জেসন বব্রোভিচ বলেন, ‘ওই এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীদের সমর্থন এবং আমাদের সদস্যদের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে আমরা ঘটনার ২৫ মিনিটের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। ’এই ধরনের ঘটনা সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে এবং আমাদের শহরে এটি সহ্য করা হবে না।
পুলিশ বলছে, তারা মনে করে না এই হামলা বর্ণবাদী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে তাদের ডাইভারসিটি রিসোর্স টিম এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছে সিটি নিউজ।