পেটের তাগিদে মানুষকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়। অনেক সময় কাজ না-পসন্দ হলেও শুধুমাত্র বেঁচে থাকার তাগিদে বা পরিবারের চাপে সেই কাজ করে যেতে হয়। কিন্তু, কাজ পছন্দ না হওয়া এবং অত্যধিক চাপের জন্য এক ব্যক্তি যা করলেন, তা সকলকে হতবাক করে দিল। হিসাবরক্ষক হিসেবে কম্পিউটার অপারেটরের কাজ পছন্দ না হয়, এক ব্যক্তি নিজের আঙুলই কেটে ফেললেন। এমনই ঘটনা ঘটেছে গুজরাটের সুরাটে।
আরও পড়ুন: অফিসে কাজের চাপে জেরবার? কীভাবে তরতাজা রাখবেন মন? জানুন সেরা ৫ উপায়
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম ময়ূর তারাপাড়া। প্রাথমিকভাবে তিনি দাবি করেছিলেন, যে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। জ্ঞান ফিরতেই দেখেন তাঁর বাঁ-হাতের চারটি আঙুল নেই। পরে তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ওই ব্যক্তি নিজের এক আত্মীয়ের হিরের ফার্মে কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কাজ করতে চান না বলেই ইচ্ছাকৃতভাবে আঙুল কেটে ফেলেছিলেন। সেই কথা স্বীকার করে নেন তিনি।
ঘটনাটি গত ৮ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে আসে। ময়ূর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি পুলিশকে জানান, তাঁর বাঁ হাতের আঙুল নিখোঁজ। প্রথমের দিকে তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ওই রাতে সুরাটের বেদান্ত সার্কেলের কাছে এক বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন ময়ূর। এক ঘণ্টা হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁর বন্ধু সেখানে আসেনি। তখন তিনি বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পথেই মাথা ঘোরা শুরু হয় এবং তিনি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। জ্ঞান ফেরার পর তিনি লক্ষ্য করেন তাঁর বাঁ হাতের চারটি আঙুল নেই।
ময়ূর এক বন্ধুকে বিষয়টি জানান। এরপর ওই বন্ধু এসে ময়ূরকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা তাঁর কাটাচিকিৎসা করেন এবং ওইদিনই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেন। তবে পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল থেকে কোনও রক্তের দাগ বা প্রমাণ পায়নি। তখন সন্দেহ হয় পুলিশের।
কয়েকদিন পরেই সত্য উদঘাটন করে সুরাট ক্রাইম ব্রাঞ্চ। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ভাবেশ রোজিয়া বলেন, ‘ময়ূর তারাপাড়া নিজের আঙুল কেটে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি একটি ছুরি কিনে পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছেন’। তিনি আরও জানান, ময়ূরের ওপর কাজের চাপ ছিল। তিনি একজন আত্মীয়ের মালিকানাধীন একটি জুয়েলারি শোরুমের হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করতেন এবং নিজের অনিচ্ছার থাকা সত্ত্বেও বাবার চাপের মুখে পড়ে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ময়ূর পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রথমে তিনি তিনটি আঙুল কেটে ফেলেন পরে আরও একটি আঙুল কেটে ফেলেন। তবে ময়ূর সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেন, ‘আমি কেন এটা করেছি নিজেই জানি না।’