গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপে অনেক গাছপালা শুকিয়ে যেতে শুরু করে। মাটির আর্দ্রতা হারিয়ে যায়, কিন্তু যখন শমী গাছের কথা আসে, তখন মানুষের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। শমী কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিশেষ নয়, এটি সুখ, সমৃদ্ধি এবং ইতিবাচক শক্তির প্রতীকও বিবেচিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে যদি এই গাছটি শুকিয়ে যেতে শুরু করে, তাহলে মানুষ প্রায়শই ব্যয়বহুল সার এবং স্প্রে ব্যবহার করে, কিন্তু এখন একটি ঘরোয়া প্রতিকার ভাইরাল, যা কোনও খরচ ছাড়াই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।
এই ঘরোয়া প্রতিকারের জন্য মাত্র দু' টি উপাদানের প্রয়োজন: বাটার মিল্ক এবং হলুদ। যদিও এই পদ্ধতিটি সাধারণ শোনাতে পারে, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের অভিজ্ঞতা এটিকে কার্যকর বলে প্রমাণ করছে। বলা হচ্ছে যে শমী গাছের গোড়ায় এই দ্রবণ ঢেলে দিলে, শুকনো গাছটি কয়েক দিনের মধ্যে আবার সবুজ হয়ে ওঠে। তাহলে আসুন জেনে নিই কীভাবে এই সমাধানটি কাজ করে এবং কখন এবং কীভাবে এটি ব্যবহার করা উচিত।
শমী গাছ বাঁচানোর সহজ ও দেশীয় উপায়
গ্রীষ্মকালে গাছপালা শুকিয়ে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার, কিন্তু যদি শমী গাছ শুকিয়ে যেতে শুরু করে, তাহলে মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়ে। এর কারণ হল এর বিশেষ ধর্মীয় ও স্থাপত্যিক তাৎপর্য। এমন পরিস্থিতিতে, এক কাপ বাটারমিল্ক-এর সঙ্গে আধা চা চামচ হলুদ মিশিয়ে ধীরে-ধীরে গাছের গোড়ায় ঢেলে দিন। এই দ্রবণটি গাছের মাটিতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়াকে সক্রিয় করে এবং শিকড়কে শক্তিশালী করে। হলুদ ব্যাকটেরিয়া-বিরোধী এবং বাটারমিল্কের মধ্যে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিড মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখে। অনেক বাগান বিশেষজ্ঞও বিশ্বাস করেন যে এই পদ্ধতিটি কেবল শাম্মির জন্যই নয়, তুলসি এবং অ্যালোভেরার মতো গাছের ক্ষেত্রেও কাজ করে।
শমী গাছটি কেন বিশেষ
শমী গাছ কেবল গ্রীষ্মকালে ছায়া দেয় না, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও এর গভীর তাৎপর্য রয়েছে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে ঘরে শমী গাছ লাগালে বাস্তুদোষ দূর হয় এবং ইতিবাচক শক্তি বজায় থাকে। এই কারণেই অনেকে এটি বাড়ির উঠোনে বা বারান্দায় লাগান। কিন্তু গ্রীষ্মকালে যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে যায়, তখন এর পাতা ঝরে পড়তে শুরু করে এবং গাছটি শুকিয়ে যেতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে, সময়মত যত্ন এবং সঠিক পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে সপ্তাহে একবার হলুদ-বাটারমিল্ক দ্রবণ ঢেলে দিলে গাছটি দীর্ঘ সময় ধরে সবুজ থাকতে পারে।
গ্রীষ্মে গাছের যত্ন কীভাবে নেবেন
শুধু শমী নয়, গ্রীষ্মকালে সকল গাছেরই বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। বিশেষ করে পোড়ামাটির টবে জন্মানো গাছগুলি দ্রুত শুকিয়ে যায় কারণ তাদের মধ্যে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকে। এমন পরিস্থিতিতে খুব ভোরে বা সন্ধ্যায় গাছে জল দেওয়া ভালো। মাটিতে গোবর সার, নিমের খোসা বা ভার্মিকম্পোস্ট যোগ করলেও গাছগুলিকে পুষ্টি পাওয়া যায়। এছাড়াও, পাত্রগুলিকে সরাসরি সূর্যের আলোতে না রেখে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখুন। বাটারমিল্ক এবং হলুদের রেসিপিটি কেবল জরুরি অবস্থার জন্য নয়, এটি আপনার নিয়মিত রুটিনেও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এটি গ্রীষ্মেও আপনার বাগানের সবুজতা অক্ষুণ্ণ রাখবে।