HT Bangla Exclusive GI Fistula: যে খাবারই খাচ্ছেন, বেরিয়ে আসছে পেটের উপর থাকা একটি ছিদ্র দিয়ে। শরীরে লাগছে না কিছুই। দিন দিন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে দেহ। ক্ষীণ হয়ে আসছে বাঁচার সম্ভাবনা। হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন তাবড় তাবড় চিকিৎসকরাও। ৭২ বছর বয়সি সেই বৃদ্ধাকেই জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাঁচিয়ে তুলল কলকাতার সিএমআরআই হাসপাতাল।
ঠিক কী হয়েছিল রোগিনীর?
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ৭২ বছর বয়সী অতসী চট্টোপাধ্যায় (নাম পরিবর্তিত) একজন ক্যানসার সারভাইভার। দক্ষিণ ভারতের ভেলোরে তাঁর অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের চিকিৎসা হয়। এই চিকিৎসার পরেই তাঁর শরীরের হার্নিয়া ধরা পড়ে। পরে সেই হার্নিয়ারও অস্ত্রোপচার করেছিলেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসা শেষে অস্ত্রোপচার করা অংশে একটি মেশ (পর্দাজাতীয় একটি বিশেষ আচ্ছাদন) লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেশটি ক্ষয়ে যেতে থাকে। অন্য দিকে বয়স্কার ক্ষুদ্রান্ত্রে একটি ফিশচুলা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ফিশচুলা। এই ফিশচুলার জেরে ক্ষুদ্রান্ত্রের সঙ্গে অন্য অঙ্গের যোগ স্থাপন হয়। হার্নিয়ার জেরে পেটের উপর তৈরি হয়েছিল একটি ছিদ্র। ঘটনাচক্রে এক্ষেত্রে পেটের সেই ছিদ্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হয়। এর পর থেকে তিনি যা-ই খাচ্ছিলেন, বেরিয়ে আসছিল পেটের ছিদ্র দিয়ে প্রাথমিকভাবে অদ্ভুত শুনতে লাগলেও রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। বৃদ্ধাকে বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন - অ্যান্ড্রয়েডে ২১ অথচ আইফোনে ১০৭! ক্যাপসিকামের দামে কেন আকাশপাতাল ফারাক
কী বলছেন চিকিৎসক?
বেশ জটিল একটি অস্ত্রোপচার করে দুঃসাধ্য সাধন করেন সিএমআরআই হাসপাতালের জিআই ও হেপাটো-বিলিয়ারি সার্জেন চিকিৎসক অজয় মণ্ডল। তাঁর তত্ত্বাবধানেই ভর্তি হন রোগিনী। চিকিৎসকের হাতযশে তিনটি জটিল অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে ওঠেন রোগিনী। তিনটে অস্ত্রোপচার কেন? চিকিৎসক হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানাচ্ছেন, ‘একেই হার্নিয়ায় ভুগছিলেন ওই সত্তোরোর্ধ্ব মহিলা। হার্নিয়ার মেশ ক্ষয়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা পাচ্ছিলেন। হারিয়ে ফেলেছিলেন হাঁটাচলার ক্ষমতা। প্রথমে অস্ত্রোপচার করে মেশটি সরিয়ে দেওয়া হয়। পরের ধাপে রোগিনীর ফিশচুলার অস্ত্রোপচার করে ক্ষুদ্রান্ত্রকে স্বাভাবিক করে দেওয়া হয়। যার ফলে পেটের ছিদ্র দিয়ে খাবার বেরনো বন্ধ হয়ে যায়। খাবার বৃহদন্ত্রে চলে যেতে শুরু করে। ফের আগের মতোই অন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক হয়ে যায়।’
আরও পড়ুন - গোমূত্র নয়, চিনে বিক্রি হচ্ছে ব্য়াঘ্রমূত্র! মামার প্রস্রাবে নাকি সারছে কঠিন রোগ
বর্তমানে কেমন আছেন রোগিনী?
আপাতত সুস্থ রয়েছেন রোগিনী। স্বামী পল্লববাবুর (নাম পরিবর্তিত) কথায়, ‘বাঁচার আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছিল। আমার স্ত্রী ক্যানসার সারভাইভার। কিন্তু প্রাণ নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছিল এই রোগের জেরে। এই ডাক্তারই ছিলেন শেষ ভরসা। শেষমেশ বাঁচানো গেল ওকে!’