মহাশিবরাত্রির দিন শিবলিঙ্গকে দুধ দিয়ে স্নান করানোর রীতি প্রচলিত। তবে এই রীতির কিছু বিরুদ্ধমতও রয়েছে। ভারতের হাজার হাজার শিবমন্দির ও শিবলিঙ্গ রয়েছে আদিকাল থেকেই। এই সবকটি মন্দিরে কোটি কোটি ভক্তসমাগম হয় মহাশিবরাত্রির দিন। ফলে শিবরাত্রিতে প্রচুর পরিমাণ দুধ শিবের মাথায় ঢালা হয়ে থাকে। এত পরামাণ দুধ অপচয়ের বিরুদ্ধে অনেকেই প্রতিবাদ করেন। যে দেশে কোটি কোটি মানুষ অভুক্ত থাকেন, দুধের মতো পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত থাকেন, সেই দেশে এমন শুধু শিবলিঙ্গ স্নান করাতেই গ্যালন গ্যালন দুধ অপচয় করা হয় বলে মনে করেন কেউ কেউ। তবে সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর একটি মন্দিরে অভিনব পন্থা নেওয়া হল। এই পন্থায় শিবের মাথায় ঢালা দুধ আর নষ্ট হল না।
কী পন্থা নেওয়া হয়েছে?
বেঙ্গালুরুর ওই মন্দিরটিতে শিবলিঙ্গের মাথায় ঢালা দুধ দিয়ে ঘোল তৈরি করা হল পরেরদিন। সেই ঘোলই ঈশ্বরের প্রসাদ হিসেবে নিবেদন করা হল ভক্তদের কাছে। পরের দিনই অজস্র গ্লাসে করে ভক্তদের দেওয়া হয় শিব ঠাকুরের প্রসাদ ঘোল। এভাবেই বেঙ্গালুরুর ওই মন্দির গ্যালন গ্যালন দুধ নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন। প্রসঙ্গত, দুধ নষ্ট না করে তা দিয়ে ঘোল বানানোর এই বিশেষ পরিকল্পনা ওই মন্দিরের পুরোহিতের।
আরও পড়ুন - ছবিতে একটি পিজ্জা লুকোনো, খরগোশ না কচ্ছপ, কে আগে পাবে? খুঁজে পেলে উত্তর সহজ
কোন মন্দিরের ঘটনা
বেঙ্গালুরুর গঙ্গাধরেশ্বর মন্দিরের ঘটনা এটি। টি দশরহালি অঞ্চলে অবস্থিত ওই মন্দিরটির প্রধান পুরোহিত হলেন ঈশ্বরানন্দ স্বামী। বেঙ্গালুরু মিরর সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন তাঁর গবেষণার কথা। ঈশ্বরানন্দ স্বামীর কথায়, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি গবেষণা করছেন, কীভাবে ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা যায়। আবার এটাও ঠিক, দুধ খুবই পুষ্টিকর পানীয়। তাই এটি নষ্ট করাও ঠিক নয়। তবে শিবের অভিষেক করতে দুধ লাগেই। এই প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করাও সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন - নারীদের উন্নতির স্বার্থে অনুকূল ঠাকুরের এই বাণীগুলি আজও প্রাতঃস্মরণীয়
কী বললেন পুরোহিত?
ঈশ্বরানন্দ স্বামীর কথায়, তখনই তার মনে এই বিশেষ পরিকল্পনা আসে। দুধ দিয়ে অভিষেক হয়ে যাওয়ার পর তিনি দুধ একটি পাত্রে জমা করেন। পরে সেই সঞ্চিত দুধ থেকে তৈরি করা হয় ঘোল। এই ঘোল বিতরিত হল অগণিত ভক্তকুলের মধ্যে। এই উদ্যোগকে ইতিমধ্যেই অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।