কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের পরিস্থিতিতে তেমন কোনও হেরফের নেই। এখনও মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের আইসিইউ-তেই ভর্তি রয়েছেন গায়িকা। গত ৯ই জানুয়ারি থেকে অসুস্থ লতা মঙ্গেশকর ভর্তি রয়েছেন মুম্বইয়ের এই বেসরকারি হাসপাতালে। করোনা এবং নিউমোনিয়ার জোড়া ফলায় বিদ্ধ হয়েছিলেন সুরসম্রাজ্ঞী। লতাজির শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বুধবার তাঁর চিকিত্সক প্রতীত সামদানি জানান, ‘উনি এখনও আইসিইউতেই রয়েছেন। আমরা সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করছি যাতে উনি দ্রুত সেরে উঠেন। ওঁনার আরোগ্য কামনায় প্রার্থনা করুন’। জানা গিয়েছে গত ৮ই জানুয়ারি লতা মঙ্গেশকরের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। করোনার সামন্য উপসর্গ দেখা গিয়েছিল তাঁর শরীরে। বয়সের কথা মাথায় রেখে তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। ঝুঁকি নেননি চিকিত্সকরাও, ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রাখবার জন্য আইসিইউ-তে রাখা রয়েছে সুরসম্রাজ্ঞীকে। বুধবার লতা মঙ্গেশকরের মুখপাত্র অনুশা শ্রীনিবাসন আইয়ার জানান, ‘লতা দি-র শারীরিক পরিস্থিতি এক্কেবারে স্থিতিশীল। চিকিত্সকরা সায় দিয়ে তবেই বাড়ি ফিরবেন’। লতা মঙ্গেশকরের শারীরিক পরিস্থিতি বিগড়ে যাওয়ার খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন তিনি। অন্যদিকে দিদির দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বাড়িতে পুজোর আয়োজন করেছিলেন সংগীতশিল্পী আঁশা ভোঁসলে। তিনি জানান, 'লতা দিদি যাতে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, তার জন্য আমরা পরিবারের সদস্যরা ভগবান মহাদেবের কাছে প্রার্থনা করছি।'১৯২৯ সালে ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন লতা । সঙ্গীত জগৎের অবিসংবাদী সম্রাজ্ঞী হওয়ার আগে শিশু অভিনেতা হিসেবেই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেছিলেন এই প্রবাদ প্রতিম শিল্পী । ১৯৪২ সালে একটি মারাঠি ছবির সৌজন্যে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি । এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। লতার সুরেলা কন্ঠের জাদুতে বুঁদ প্রজন্মের পর প্রজন্ম। ১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড করবার নিরিখে 'গিনেস বুক'-এ নাম উঠেছিল কোকিলকন্ঠীর। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে ২৫ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করবার অনন্য নজির গড়েছেন লতা মঙ্গেশকর। ২০০১ সালে তাঁকে ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান, ভারত রত্নে ভূষিত করা হয়েছে। ৯২ বছর বয়সী এই শিল্পী ভীষণ অ্যাক্টিভ সোশ্যাল মিডিয়ায়। টুইটারের মাধ্যমে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন অনুরাগীদের সঙ্গে, তাঁর অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন ফ্যানেরা। দ্রুত সেরে উঠুক সবার প্রিয় লতা দিদি, প্রার্থনা গোটা দেশের।