২০২০ সালে মৃত্যুশোক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বিনোদন জগতের। বছর শেষ হতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন, তার আগে ফের টলিগঞ্জে দুঃসংবাদ। মঙ্গলবার ভোর চারটে নাগাদ প্রয়াত হলেন অভিনেতা, পরিচালক তথা বাচিক শিল্পী জগন্নাথ গুহ। ভর্তি ছিলেন উডল্যান্ড হাসপাতালে। সম্প্রতি কোভিড-১৯ হারিয়ে দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা, তবে কোভিড পরবর্তী সমস্যার জেরেই মৃত্যু হল। কিডনির সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন তিনি, করোনা মুক্ত হলেও সম্প্রতি সেই পুরোনো সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সোমবার ডায়ালিসের ধকল আর নিতে পারলেন না বর্ষীয়ান শিল্পী। জগন্নাথ গুহ ছিলেন কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের সবচেয়ে নামজাদা ফিল্ম স্কুল এসআরএফটিআই (SRFTI)-এর প্রাক্তন ডিন এবং শর্ট ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশনের (Short Film Associations) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। জগন্নাথ গুহর কর্মজীবন নানান রঙে ভরপুর। বিনোদনের সব ধারাকে ছুঁয়েছেন তিনি। ছোটপর্দা, বড়পর্দা থেকে রঙ্গমঞ্চ-সবর্ত্রই ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। তাঁর অন্যতম স্মরণীয় কাজ ‘সলিউশন এক্স’, ‘আবার যখের ধন’, ‘মনোরমা কেবিন’, ‘ওগো প্রিয়তমা’, ‘বর বউ খেলা’। ‘নেমসেক’, ‘সিটি অব জয়’, ‘পুরুষোত্তম’, ‘ঘরে বাইরে আজ’-এর মতো বহুচর্চিত ও সমাদৃত ছবির মুখ জগন্নাথ গুহ। পরিচালক হিসাবেও তিনি ছিলেন সুদক্ষ। ১৯৮৬ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে জগন্নাথ গুহ পরিচালিত ছবি ‘মিত্রানিকেতন ভেলানাদ’ (Mitraniketan Vellanad)-সেরা শিক্ষামূলক ছবির পুরস্কার জিতে নিয়েছিল। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আরোহন নাটকে অভিনয় করেছেন জগন্নাথ গুহ। নাট্যদল ‘জিগির’এর উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শিল্পীমহল। শোকবার্তা জারি করা হয়েছে আর্টিস্ট ফোরামের তরফে। ফোরামের কার্যনিবার্হী সভাপতি তথা অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তী ফেসবুকের দেওয়ালে লেখেন, ‘চলে গেলেন আমার প্রথম সিরিয়ালের পরিচালক জগন্নাথ গুহ, শান্তিতে থেকো জগাদা’। টলিগঞ্জের একাধিক শিল্পী জগন্নাথ গুহের সঙ্গে কাটানো নানাম অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে ডুব দিয়েছেন স্মৃতির সাগরে।