তসলিমার কথায়, ‘অনেক বাংলাদেশি শুনেছি প্যালেস্তিনীয়দের সাহায্যের জন্য সেদেশে যেতে চাইছেন। ব্যক্তিগতভাবে সবরকম অত্যাচারের বিরুদ্ধে। ইজরায়েল হোক বা প্যালেস্তাইন। তারপরেও আমি আমার দেশের নাগরিকদের বলতে চাই, তাঁদের মন প্যালেস্তিনীয়দের জন্য যখন কাঁদছেন, তখন নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের জন্য একটু কাঁদুক।’
তসলিমা নাসরিন
উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। হামসের হামলায় ক্ষত-বিক্ষত ইজরায়েল। পাল্টা প্যালেস্তাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইজরায়েল। প্যালেস্তাইনের উপর হামলায় তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে ইসলামিক দেশগুলি। এদিকে এই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে ভারতীয় উপমহাদেশেও। ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে হামাসের হামলার তীব্র নিন্দা করেছে ভারত। এই পরিস্থিতিতে মুখ খুললেন বংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
তসলিমা শুধু প্যালেস্তিনীয়দের উপর হামলায় ব্যথিত নন, তিনি নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের করুণ পরিণতি নিয়েও সমান উদ্বিগ্ন। সংবাদসংস্থা PTI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তসলিমা বলেন, ‘অনেক বাংলাদেশি প্যালেস্তিনীয়দের উপর হামলা নিয়ে সরব হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা তাঁদের দেশে সংখ্যালঘুদের উপর একই রকম হামলা নিয়ে মুখ খোলেন না কেন!’ তসলিমার কথায়, ‘অনেক বাংলাদেশি শুনেছি প্যালেস্তিনীয়দের সাহায্যের জন্য সেদেশে যেতে চাইছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সবরকম অত্যাচারের বিরুদ্ধে। সে ইজরায়েল হোক বাং প্যালেস্তাইন। কিন্তু তারপরেও আমি আমার দেশের নাগরিকদের বলতে চাই, তাঁদের মন প্যালেস্তিনীয়দের জন্য যখন কাঁদছেন, তখন নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের জন্য একটু কাঁদুক।’
৬২ বছরের লেখিকা তসলিমার কথায়, ‘আজও বাংলাদেশের বহু জায়গায় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। আর এই কারণেই আজও অনেককে নিজের দেশ ছেড়ে রিফিউজি হতে হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে সংলঘুদের উপর হামলা, ধর্মীয় স্থানে আক্রমণ, সম্পত্তি নষ্টের কারণে বারার শিরোনামে এসেছে বাংলাদেশ। বেশকিছুদিন আগে এক বাংলাদেশ সংখ্যালঘু অশীতিপর কবিকে মারধরের মতো নিন্দাজনক ঘটনাও ঘটে।
প্রসঙ্গত, একসময় নিজের লেখা, সাহিত্যের কারণে মৌলবাদীদের ফতোয়ার মুখে পড়তে হয়েছিল তসলিমা নাসরিনকে। বহুবছর ধরেই তিনি বাংলাদেশে থাকেন না। ইউরোপ, USA-র পর আপাতত তসলিমান ঠিকানা দিল্লি। এদিন বাংলাদেশের বিরোধী দলনেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়া নিয়েও মুখ খোলেন তসলিমা। তিনি বলেন, ‘একদিন খালেদা জিয়া আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিলেন। বাংলাদেশে আমার বই নিষিদ্ধ করেছিলেন। তবু বলব, তাঁকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত।’