২০০০ সালে ‘লিফট কারাদে’ গানের মাধ্যমে রাতারাতি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন গায়ক আদনান সামি। আদনানের অ্যালবামে কাজ করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে রানি মুখোপাধ্যায় সহ বহু বলি তারকারা। তবে আদনানের অতিরিক্ত ওজনের কারণে তাঁকে দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে যেতেন সাধারণ মানুষ
২০০০ সালের পর ২০২২, মালদ্বীপে আদনানের ছুটি কাটানোর ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান ভক্তরা। এ কোন আদনানকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে? এত সুন্দর? এত সেক্সি? কীভাবে আদনান হয়ে উঠলেন এত সুন্দর? এত তাড়াতাড়ি এত ওজন কীভাবে কমে গেল? কেউ ভেবেছিলেন অপারেশনের মাধ্যমে ওজন কমিয়েছেন গায়ক আবার কেউ ভেবেছিলেন অতিরিক্ত ওষুধ খেতে হয়েছে নিশ্চয়ই।
তবে ২০২২ সালে হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আদনান জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওজন নিয়ে সমস্যায় ছিলেন। ২০০৭ সালের মাঝামাঝি নাগাদ তিনি বেশ খানিকটা ওজন কমিয়েছিলেন, কিন্তু সেটা পরে আবার বেড়ে যায়। এইভাবেই চলছিল। তবে সর্বশেষ ওজন কমার আগে তাঁর ওজন ছিল ২৩০ কেজি।
আরও পড়ুন: ‘বুলেট সরোজিনী’ ছেড়েছেন শ্রীময়ী, এবার ‘রাগিনী’ চরিত্রে দেখা যাবে কাকে?
আরও পড়ুন: রাম, সীতা, রাবণ তৈরি, রণবীরের ‘রামায়ণ’ ছবিতে শিব হবেন কে? রইল বড় চমক
২৩০ কেজি ওজন থাকাকালীন ডাক্তাররা গায়ককে জানিয়েছিলেন, এইভাবেই যদি ওজন বেড়ে যায় তাহলে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই তিনি মারা যাবেন। চিকিৎসকের মুখে এই কথা শুনে আদনান এমন একটি কান্ড ঘটিয়েছিলেন, যা শুনলে আপনিও হয়তো চমকে যাবেন।
সম্প্রতি ইন্ডিয়া টিভির সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে আদনান নিজের ওজন বৃদ্ধি হয়ে যাওয়া এবং তখনকার সময়ের একটি মজাদার ঘটনা শেয়ার করেন। তিনি এও জানান, অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য কোনও অপারেশন নয়, কঠোর ডায়েটের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তিনি।
আদনান বলেন, ‘চিকিৎসকরা আমার অতিরিক্ত ওজন দেখে বলেছিলেন, এইভাবেই যদি চলতে থাকে তাহলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে আমি মারা যাব। এই ব্যাপারটা আমাকে ভীষণ আঘাত করে। চিকিৎসকের কথা শুনে আমি আরও রেগে যাই কারণ এই কথাটি উনি আমার বাবার সামনে বলেছিলেন। আমি বাবাকে আশ্বস্ত দিই এই বলে যে চিকিৎসকরা সবসময় সত্যি কথা বলেন না।’
আদনান আরও বলেন, ‘চিকিৎসকের কথা শুনে আমি এতটাই রেগে গিয়েছিলাম যে সঙ্গে সঙ্গে একটি বেকারিতে ঢুকে পড়ি এবং সেখানকার অর্ধেক খাবার খেয়ে ফেলি। সেদিন আমাকে দেখে আমার বাবা ভীষণ রেগে গিয়ে আমায় জিজ্ঞাসা করেন, আমি কি ঈশ্বরকে ভয় পাই না? ডাক্তারের কথা উপেক্ষা করায় আমায় ভীষণভাবে তিরস্কার করেন আমার বাবা।’
আরও পড়ুন: 'সুযোগ পেলেও যাব না...', দাদাগিরি নিয়ে কেন অনীহা দেবদূতের?
আরও পড়ুন: অমলের সঙ্গে কালো ড্রেসে কঙ্কনার টুইনিং, তবে প্রেমের জল্পনা উসকে কী বলছে নেটপাড়া?
২৩০ কেজি ওজন নিয়ে প্রতিদিনের জীবনে প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো আদনানকে। বেশিক্ষণ তিনি শুয়ে থাকতে পারতেন না। বসে বসে ঘুমোতে হতো। তবে বাবার তিরস্কার শুনে এবং চিকিৎসকের কথায় বাবার ভয় পাওয়া দেখে আদনান নিজের ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেন।
ওজন কমানোর গোটা প্রক্রিয়া সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে আদনান বলেন, ‘অনেকেই বলে আমি অপারেশন করিয়েছি কিন্তু একেবারেই তা নয়। আমাকে চিকিৎসকরা সমস্ত উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে মানা করে দিয়েছিলেন। আমি কয়েক বছর চিনি, অ্যালকোহল, ভাত, রুটি, তেল ছাড়া খাবার খেয়েছি। এইভাবে টানা কয়েক বছর কড়া ডায়েট মেনে চলার পর অবশেষে আমার ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে।’