কালিম্পং বিধানসভা নির্বাচনে ৫৩,২২৭ ভোট পেয়ে জয়ী বিজেপির শুভ প্রধান।পাহাড়ের তিনটি আসন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে ছেড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তিন আসনেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয় তামাং এবং বিমল গুরুং গোষ্ঠী পৃথক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বিনয় তামাং গোষ্ঠীর প্রার্থী রুদেন লেপচা। বিমল গুরুং গোষ্ঠীর প্রার্থী হলেন রাম ভুজেল। এই আসনে এই আসনে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন শুভ্রা প্রধান। বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে দাঁড়াচ্ছেন কংগ্রেসের দিলীপ প্রধান।কালিম্পঙের পরিচিতি রয়েছে শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য। এগুলির অধিকাংশ ব্রিটিশ আমলে স্থাপিত হয়। চিনের তিব্বত আগ্রাসন ও ভারত-চিন যুদ্ধের আগে পর্যন্ত এই শহর ছিল ভারত-তিব্বত বাণিজ্যদ্বার। ৮০-র দশক থেকে কালিম্পং ও প্রতিবেশী দার্জিলিং পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র।কালিম্পং তিস্তা নদীর ধারে একটি শৈলশিরার ওপর অবস্থিত। মনোরম জলবায়ু ও সহজগম্যতা একে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র করেছে। উদ্যানপালনে কালিম্পং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নানাপ্রকার অর্কিড দেখা যায়। এখানকার নার্সারিগুলিতে হিমালয়ের ফুল, স্ফীতকন্দ ও রাইজোমের ফলন হয়। কালিম্পংয়ের অর্থনীতিতে এই ফুলের বাজার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নেপালি, অন্যান্য আদিবাসী উপজাতি ও ভারতের নানা অংশ থেকে অভিনিবেশকারীরা শহরের প্রধান বাসিন্দা। কালিম্পং বৌদ্ধধর্মের একটি কেন্দ্র। এখানকার জ্যাং ঢোক পালরি ফোডাং বৌদ্ধমঠে বহু দুষ্প্রাপ্য তিব্বতি বৌদ্ধ পুঁথি রক্ষিত আছে।কালিম্পং বিধানসভা কেন্দ্র কালিম্পং জেলার একটি বিধানসভা কেন্দ্র।ভারতের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে ২২ নম্বর কালিম্পং বিধানসভা কেন্দ্রটি কালিম্পং পৌরসভা, কালিম্পং-১ সিডি ব্লক, কালিম্পং-২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক গরুবাথান সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত। কালিম্পং বিধানসভা কেন্দ্রটি ৪ নম্বর দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন জিজেএমের সরিতা রায় তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেএপি—র হরকা বাহাদুর ছেত্রীকে এই আসনে পরাজিত করেন। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিএজএমের হরকা বাহাদুর ছেত্রী তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জিএনএলএফের প্রকাশ দাহালকে পরাজিত করেন।২০০৬, ২০০১ ও ১৯৯৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিএনএলএফের গৌলান লেপচা কালিম্পং আসন থেকে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নির্দল এবিজিএলকে নর্ডেন লামাকে পরাজিত করেন তিনি। ১৯৯১ সালে নির্দলের নিমা তশরিং মোক্তান সিপিআইয়ের মোহন সিং রাইকে পরাজিত করেন। ১৯৮৭ সালে সিপিআইয়ের মোহন সিং রাই কংগ্রেসের তাসী তশরিং লেপচাকে এই আসনে পরাজিত করেন। ১৯৮২ সালে নির্দলের রেনু লীনা সুব্বা, নির্দল এবিজিএলের বদ্রীনারায়ণ প্রধান ও ১৯৭৭ সালে গজেন্দ্র গুরুংকে পরাজিত করেন।১৯৭২ সালে কংগ্রেসের গজেন্দ্র গুরুং এই আসনে জয়ী হন। ১৯৭১ সালে আইজিএলের মদনকুমার সুব্বা জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে আইজিএলের পি.এল. সুব্বা জয়ী হন। ১৯৬৭ সালে কংগ্রেসের কে.বি. গুরুং এই আসনে জয়ী হন। তার আগে ১৯৬২ সালে আইজিএলের লক্ষ্মীরঞ্জন জোশী জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৫৭ সালে নির্দলের নর বাহাদুর গুরুং জেতেন।১৯৫১ সালে দেশের প্রথম নির্বাচনে সিপিআইয়ের ললিত বাহাদুর খর্গ কালিম্পং আসনে জয়ী হন।