ক্ষমতায় আসার আগে ডাক দেওয়া হয়েছিল, ‘বদলা নয়, বদল চাই’। কিন্তু সাত বছর পর পঞ্চায়েত ভোটের সময় সেই স্লোগানই বদলে যায়। চতুর্থ দফার ভোটের দিনতিনেক আগে তৃণমূল কংগ্রেসকে তোপ দেগে একথা বললেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে যখন আমরা (তৃণমূল) ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখন আমাদের স্লোগান ছিল, বদলা নয়, বদল চাই। কিন্তু (২০১৮ সালের) পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে সেই লক্ষ্য পিছনে চলে যায়। যদি আমি ১০ বছরে কাজ করে থাকি, তাহলে কেন অন্যদের মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে আটকে দেব?’ রাজনৈতিক হিংসার রেশ ধরে বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় মমতার ‘খেলা হবে’ স্লোগান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাজীব। যে ‘খেলা হবে’ স্লোগানকে নির্বাচনী স্লোগানকে পরিণত করেছেন রাজীবের বিধানসভা কেন্দ্র ডোমজুড়ের ভোটার তথা তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। রাজীবের দাবি, ‘যখন আপনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বলেন যে খেলা হবে, তখন কী বোঝাতে চান? এটার অর্থ হল যে সিপিআইএমের মতোই আপনি ভোট লুঠ করবেন।’ আমফান-পরবর্তী ত্রাণবণ্টনে যে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, তা নিয়েও তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাজীব। যা দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ভোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। সেই রেশ ধরেই রাজীব বলেন, ‘আমফান ত্রাণবণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ আমিই প্রথম তুলেছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্বাস করেছিল বাংলা।' তবে শুধু আমফান নয়, তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ তোলেন রাজীব। তাঁর দাবি, আর ‘কাটমানি সংস্কৃতি’ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন বলেই তাঁকে তৃণমূল সরকারে একঘরে করে দেওয়া হয়েছিল। তবে রাজীবের বিশ্বাস, ‘মানুষের জন্য কাজ করেছেন’ তিনি। তাই ডোমজুড়ে তাঁর জয় নিশ্চিত। তা সত্ত্বেও সূক্ষভাবে মেরুকরণের তাস খেলতে পিছপা হননি রাজীব। তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনটা আমার কাছে চ্যালেঞ্জের নয়। আমি তাঁদের (ভোটারদের) প্রত্যেকের দাদা, ছেলে এবং পরিবারের সদস্য। আমি ডোমজুড়ে এভাবেই পরিচিত। মানুষ বুঝতে পারবেন যে উনি ৩০ শতাংশের জন্য (সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক) লড়াই করছেন, আর আমি ১০০ শতাংশের জন্য লড়ছি।’ পাশাপাশি মমতার ভাষার ব্যবহার নিয়েও তোপ দেগেছেন রাজীব। তাতে নাকি রীতিমতো হতবাকও হয়েছেন। নিজেকে মমতাকে প্রতি এখনও শ্রদ্ধাশীল বলে দাবি করেন রাজীব বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (অমিত শাহ) এবং প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদীর) বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী যে ভাষার ব্যবহার করছেন, তা আমি কখনও ভাবতেও পারিনি। তাঁর প্রতি আমি এখনও শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু মানুষ এরকম কাজকর্ম মেনে নেবেন না।’