রাত পোহালেই লোকসভা নির্বাচনের গণনা এবং ফলপ্রকাশ হবে। তাই টেনশনে আছে সব রাজনৈতিক দল। কারণ ইতিমধ্যেই এক্সিট পোল সামনে এসেছে। সেটা যে সবটাই মিলবে তা নয়। একেবারে নাও মিলতে পারে। আবার যদি মেলে তাহলে তো চাপ বাড়তে থাকবে। বিশেষ করে বাংলায় কে কোন জায়গায় রয়েছে সেটা বড় ফ্যাক্টর। তাই তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি এবং বাম–কংগ্রেস জোট এখনই সবটা বুঝতে পারছে না। এই আবহে রবিবার ভার্চুয়াল বৈঠক করে প্রার্থী, জেলা সভাপতি এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দেখাদেখি সিপিএম–কংগ্রেসও প্রার্থী এবং কাউন্টিং এজেন্টদের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের ফল ভাল হবে। তা বলে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। গণনাকেন্দ্রে গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত জায়গা ছাড়া যাবে না। আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কর্মীদের বলেছি, গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাটি কামড়ে বসে থাকতে হবে। কারও কথা শুনে গণনাকেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে আসা যাবে না।’ সিপিএম এই বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ইভিএমের ‘কন্ট্রোল ইউনিট’ ও ভিভিপ্যাটের নম্বর মিলিয়ে নিতে হবে। আসলে সিপিএম আশা করছে এবার তাদের ভোট ফেরত আসবে। সেখানে যাতে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে না পারে।
আরও পড়ুন: ভোটগণনার পরও বাংলায় মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, কতদিন রাখবে নির্বাচন কমিশন?
বিজেপির যে ছলনার অভাব নেই সেটা উঠে এসেছে অভিষেকের বৈঠকে। নন্দীগ্রামের লোডশেডিং–পর্ব বৈঠকে উঠে এসেছিল বলেই সূত্রের খবর। তাই নেতা–কর্মীদের দাঁতে দাঁত চেপে গণনাকেন্দ্রে পড়ে থাকতে বলেছেন তিনি। চোখ–কান সজাগ রেখে একাগ্র চিত্তে কাজ করতে বলেছেন। এমনকী বিজেপির প্ররোচনায় পা না দেওয়ার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। বুথফেরত সমীক্ষায় যা বলা হয়েছে তাতে বাম–কংগ্রেসের চিন্তা বেড়েছে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুথফেরত সমীক্ষাকে ‘ভুয়ো’ বলে তোপ দেগেছেন। অভিষেক স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এটাও একটা বিজেপির চাল। তাই বিভ্রান্ত না হয়ে গণনাকেন্দ্রে শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে।
আজ, সোমবার নানা আশঙ্কার কথা জানাতে নির্বাচন কমিশনে যাবেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী। সেলিম জানান, কলকাতা ও সংলগ্ন জেলার ১৫ জন প্রার্থীকে নিয়ে তিনি আজ নির্বাচন কমিশনে যাবেন। সেলিম বলেন, ‘আমাদের বেশকিছু আশঙ্কা রয়েছে। সেইসব জানাতেই নির্বাচন কমিশনে যাব।’ গণনার কাজে অস্থায়ী, চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে না রাখার দাবি জানাতে যাবে সিপিএম বলে সূত্রের খবর। আজ সকালে হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেসে করে কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার কথা ছিল মহম্মদ সেলিমের। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে যাবেন বলে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার সময় পিছিয়ে দিয়েছেন।