বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের হিন্দু সহ ৬টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতেই আনা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। ২০১৯ সালে এই আইনটি সংসদের অনুমোদন পেয়ে তৈরি হয়েছিল। তবে এই আইনের নিয়ম তৈরি হয়নি এতদিনে। তবে সম্প্রতি এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, সিএএ সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি হয়ে গিয়েছে।
সিএএ নিয়ে কংগ্রেসের কী বক্তব্য?
লোকসভা নির্বাচন এসে গেল বলে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলায় তিনটি জনসভা করে ফেলেছেন কয়েকদিনের মধ্যেই। এখনও মোদীর গলায় 'সিএএ বার্তা' শোনা যায়নি। তবে বঙ্গ বিজেপি নেতারা এই নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন সম্প্রতি। এরই মাঝে কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলায় বহু মানুষের আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে বিজেপি সব ক্ষেত্রেই সিএএ-কে হাতিয়ার করেছে। আর এবার ভোট ময়দানে কংগ্রেসের হাতিয়ারও সেই সিএএ। তবে তারা সিএএ-ভীতিকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি বিরোধী ভোটকে কাছে টানতে চাইছে। এই আবহে বাংলার মতুয়া নয়, কংগ্রেসের নজরে অসম এবং উত্তরপূর্বের ভোটাররা। (আরও পড়ুন: বছর বছর বেতনে 'লোকসান' এই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের, অঙ্ক বদলে এবার আসবে বড় চমক!)
কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা পবন খেরা বুধবার দাবি করেন, কংগ্রেস যদি সরকার গঠন করে তাহলে ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে বাতিল করা হবে। অসমের উদাহরণ তুলে ধরে পবন বলেন, 'অসমের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের ডেডলাইন হল ১৯৭১। তবে সিএএ কার্যকর হলে সেই ডেডলাইন ২০১৪ হয়ে যাবে। এটা অসমের শহিদদের প্রতি অপমান।' উল্লেখ্য, অসম চুক্তি মতে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে বাংলাদেশ থাকা আসা মানুষজনদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। এই জন্যেই অসমে এনআরসি হয়েছিল। এই আবহে পবনের বক্তব্য, 'উদ্বাস্তুদের বিষয়ে যেকোনও আইন অবশ্যই সাংবিধানিক বিধানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করতে হবে। বিজেপি অসমের ওপর এই সিএএ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিজেপি সবার ঊর্ধ্বে নয়। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে সিএএ বাতিল করবে।' (আরও পড়ুন: আসন ভাগাভাগি নিয়ে জটিল অঙ্ক, এবার শিন্ডে আর অজিত পাওয়ারের দল 'ভাঙাবে' BJP?)
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের হিন্দু সহ ৬টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতেই আনা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। ২০১৯ সালে এই আইনটি সংসদের অনুমোদন পেয়ে তৈরি হয়েছিল। তবে এই আইনের নিয়ম তৈরি হয়নি এতদিনে। তবে সম্প্রতি এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, সিএএ সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই আবহে লোকসভা ভোটের আগেই তা কার্যকর করা হবে বলে দাবি করা হয়ে সাম্প্রতিক রিপোর্টে। এর আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক জানিয়েছিলেন, সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য অনলাইনেই আবেদন জানানো যেতে পারে। এর জন্য অনলাইন পোর্টালও তৈরি হয়েছে। এই গোটা প্রক্রিয়া অনলাইনেই করা হবে। সেখানে আবেদনকারীদের শুধু জানাতে হবে যে কোন সালে বিনা নথিতে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন তাঁরা। তাঁদের কাছ থেকে কোনও নথি চওয়া হবে না। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পদক্ষেপ করছে। এর আগে বিগত ৪ বছর ধরে সিএএ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার টালবাহানা করেছে। কোভিডের আগে দেশ জুড়ে সিএএ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এই আবহে আইনটি কার্যকর হলেও তা প্রয়োগ করা হয়নি। শাহ দাবি করেছিলেন, কোভিড চলে গেলেই সিএএ-র নিয়ম তৈরি করে তা প্রয়োগ করা হবে। আর লোকসভা ভোটের আবহে বঙ্গ বিজেপির নেতারা সিএএ নিয়ে সরব হয়েছেন বারবার। অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ-র বিরোধিতা করে এসেছেন। এবার মমতার পথে হেঁটেই সিএএ বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিল কংগ্রেস।