প্রাক্তন পেসার অজিত আগরকরের নেতৃত্বে বিসিসিআইয়ের সিনিয়র পুরুষ নির্বাচক কমিটি ভারতীয় ‘এ’ দলের ১৪ সদস্য চূড়ান্ত করেছে বলে জানা গেছে, যাঁরা ৩০ মে থেকে ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে চার দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। তবে সংশোধিত আইপিএলের সূচি নির্বাচন কমিটির সামনে অপ্রত্যাশিত বাধা তৈরি করেছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আগরকর এবং তাঁর দল দুই ম্যাচের সিরিজের জন্য দু'টি পৃথক ইন্ডিয়া ‘এ’ টিম বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের মতে, ‘অজিত আগরকরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় নির্বাচক প্যানেল প্রথম ম্যাচের জন্য ১৪ সদস্যের একটি দল নির্বাচন করেছে, যার মধ্যে এমন খেলোয়াড়রাও রয়েছেন, যাঁদের টি-টোয়েন্টি লিগে অংশগ্রহণ লিগ পর্যায়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে।’
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য ভারতের নিশ্চিত ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ইন্ডিয়া ‘এ’ দলের অংশ হতে চলেছেন। কারণ তাঁর আইপিএল টিম, রাজস্থান রয়্যালসের প্লে-অফে যোগ্যতা অর্জনের কোনও সম্ভাবনা নেই। ভারতীয় ‘এ’ দলের প্রথম ম্যাচে আরও একটি বড় নাম খেলার সম্ভাবনা রয়েছে, তিনি হলেন ইশান কিষাণ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ায়, বাঁ-হাতি এই কিপার-ব্যাটসম্যানের খেলতে সমস্যা হবে না। প্রায় দেড় বছর পর দলে ফিরবেন ইশান কিষাণ। তবে কিপারের পদের জন্য পরবর্তীতে ধ্রুব জুরেলের সঙ্গে তাঁকে কঠিন প্রতিযোগিতায় জিততে হবে, যিনি বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ভারতের টেস্ট দলের অংশ ছিলেন।
প্রথম ম্যাচে ইশান কিষাণ এবং জুরেল উভয়েরই ভারত ‘এ’ দলের একাদশে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে, তাদের মধ্যে একজন মনোনীত ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলবেন।
অন্যান্যদের মধ্যে, অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর ‘এ’ দলের অংশ হিসেবে টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন করতে প্রস্তুত। বাংলার ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরণ (কোনও আইপিএল দলের অংশ নন), অলরাউন্ডার নীতিশ কুমার রেড্ডি এবং পেসার অংশুল কাম্বোজেরও ‘এ’ দলের হয়ে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে ‘এ’ দলের দু'টি ম্যাচই অভিমন্যু ঈশ্বরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে, যিনি বেশ কিছু দিন ধরেই মাঠের বাইরে। ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে ভালো পারফরম্যান্স করতে পারলে, যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গী হিসেবে ঈশ্বরণের টেস্ট অভিষেকের দরজা খুলে যেতে পারে।
প্রতিবেদনে ইন্ডিয়া ‘এ’-এর প্রথম ম্যাচের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের মধ্যে করুণ নায়ার এবং মুকেশ কুমারের নামও উল্লেখ করা হয়েছে, তবে দিল্লি ক্যাপিটালস যদি প্লেঅফের জন্য যোগ্যতা অর্জন করে, তাহলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে। আশ্চর্যজনক ভাবে, সরফরাজ খান, যিনি আইপিএলের অংশ নন, তিনি প্রথম ব্যাচের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভ্রমণ করবেন না, কারণ তাঁর মূল দলে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
সদ্য অবসর নেওয়ার রোহিত শর্মার স্থলাভিষিক্ত হয়ে ভারতের পরবর্তী টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে শুভমন গিলও ভারতের ‘এ’ দলের হয়ে খেলতে পারেন। তবে তাঁর দ্বিতীয় ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে, যাতে ২০ জুন থেকে শুরু হতে চলা পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের আগে ম্যাচ অনুশীলনের সুযোগ তৈরি হয়। গুজরাট টাইটান্সে তাঁর ওপেনিং জুটি সাই সুদর্শনও ভারতের ‘এ’ দলের অংশ হবেন। ওপেনারের জায়গায় তিনি ঈশ্বরণের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী। আর একজন জিটি খেলোয়াড়, ওয়াশিংটন সুন্দর, দ্বিতীয় ব্যাচে সম্ভবত ইংল্যান্ডে ভ্রমণ করবেন।
সকলের আগ্রহ থাকবে আংশুল কাম্বোজের পারফরম্যান্সের উপরেও। ভারতের মূল দলে জায়গা করে নেওয়ার জন্য তাকে ডার্ক হর্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পেসার জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ শামি এবং মহম্মদ সিরাজের পাঁচটি টেস্টেই খেলার সম্ভাবনা কম, যেখানে ভারতের বেঞ্চ স্ট্রেংথ পরীক্ষা করা হবে।
জিটি-র হয়ে আইপিএলে ভালো খেলার পরে প্রসিধ কৃষ্ণ নিশ্চিত। প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর বিশেষ ভাবে হর্ষিত রানার প্রতি অনুরাগী, যিনি অস্ট্রেলিয়া সফরে তাঁর সুনামের কোনও ক্ষতি করেননি। ব্যাকআপ পেসারের জন্য মুকেশ কুমার, আকাশ দীপ এবং আংশুল কাম্বোজের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়া হবে।
ভারতের সম্ভাব্য ‘এ’ স্কোয়াড: যশস্বী জয়সওয়াল, ইশান কিষাণ, করুণ নায়ার, নীতিশ কুমার রেড্ডি, অভিমন্যু ঈশ্বরন, ধ্রুব জুরেল, শার্দুল ঠাকুর, তনুশ কোটিয়ান, মুকেশ কুমার, আকাশ দীপ, খলিল আহমেদ, আংশুল কম্বোজ এবং মানব সুথার।