ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালের আগের দিন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ট্র্যাভিস হেডকে দ্রুত আউট করতে বরুণ চক্রবর্তীর হাতে নতুন বল তুলে দেওয়া উচিত। ভাগ্যের কি খেলা, এ দিন সেই কথাই সত্যি হয়ে গেল।
ভারত যা চাইছিল, ঠিক সেটাই করে দেখালেন বরুণ চক্রবর্তী। আইসিসি মেনস চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিলেন ভারতের রহস্যময় স্পিনার। মঙ্গলবার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ট্র্যাভিস হেডকে আউট করে ভারতকে বড় স্বস্তি এনে দিলেন বরুণ চক্রবর্তী।
বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ট্র্যাভিস হেড দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন এবং দ্রুত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন। মহম্মদ শামি ও হার্দিক পান্ডিয়ার পেস আক্রমণকে দাপটের সঙ্গে সামলানোর পাশাপাশি কুলদীপ যাদবের বিরুদ্ধেও আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল তাঁকে। তবে বরুণ চক্রবর্তীর করা প্রথম বলেই বড় শট খেলার চেষ্টা করেন হেড, যা তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে বরুণ এক অসাধারণ ডেলিভারি করেন। হেড এগিয়ে এসে বড় শট খেলতে গিয়ে ঠিকমতো সংযোগ ঘটাতে পারেননি। ফলে সহজ ক্যাচ চলে যায় লং-অন অঞ্চলে দাঁড়ানো শুভমন গিলের হাতে। গিল সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করলে দুবাইয়ের গ্যালারিতে উল্লাস বয়ে যায়। ৩৩ বলে ৩৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান হেড, যার ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কা।
অনেকগুলো আইসিসি টুর্নামেন্টেই ভারতের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়েছিলেন ট্র্যাভিস হেড। ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল, ২০২৩ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল এবং বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন তিনি। তাই তাকে এই ম্যাচেও ‘ডেঞ্জার ম্যান’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল।
ভারত ম্যাচের প্রথম বলেই তার উইকেট পেতে পারত, তবে মহম্মদ শামি নিজের বলে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন। তবে এরপরে ঝড় তোলেন ট্র্যাভিস হেড। এরপরেই বরুণ চক্রবর্তীকে বল করাতে আনেন রোহিত।
ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালের আগের দিন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ট্র্যাভিস হেডকে দ্রুত আউট করতে বরুণ চক্রবর্তীর হাতে নতুন বল তুলে দেওয়া উচিত। ভাগ্যের কি খেলা, এ দিন সেই কথাই সত্যি হয়ে গেল। যদিও বরুণকে পাওয়ারপ্লের শেষের দিকে আক্রমণে আনা হয়েছিল, তবুও তিনি নিজের কাজ সম্পন্ন করেছেন।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন বলেছিলেন, ‘নতুন বল দিন বরুণকে এবং তাকে উইকেটের ওপর দিয়ে ট্র্যাভিস হেডকে বল করতে বলুন। হেড তার তিনটি স্টাম্প একসঙ্গে দেখিয়ে পা সরিয়ে বড় শট মারতে চায়। নতুন বলে বরুণ চক্রবর্তী বল করলে ভারতের জন্য লাভজনক হতে পারে। এটি হতে পারে রোমাঞ্চকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমি অবাক হব যদি ট্র্যাভিস হেড বরুণের বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক খেলেন। সে অবশ্যই আক্রমণ করতে চাইবে, কিন্তু এটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হবে। হয় সে অস্ট্রেলিয়াকে দুর্দান্ত শুরু দেবে, না হলে দ্রুত আউট হয়ে ফিরবে। যদি হেড তাকে বড় শট খেলতে না চায়, তাহলে বরুণকে পাঁচ ওভার পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে।’