আমদাবাদে সম্প্রতি মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। সেই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার বিমানের উড়ানের পথে ভবনের উচ্চতা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কঠোরভাবে কার্যকর করতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা। বিল্ডিং বিভাগের তরফে প্রতিটি বরোর ইঞ্জিনিয়ারদের ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের (এএআই) জারি করা নির্দেশিকা কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: উড়ল, ভেসে থাকল, নামা শুরু, তারপর বিস্ফোরণ- ৫৯ সেকেন্ডেই শেষ এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান
উল্লেখ্য, বিমান ওঠানামার পথে বিমানবন্দরের আশপাশের ভবনের উচ্চতা নিয়ে পুরসভাকে একাধিক নির্দেশিকা দিয়েছে এএআই। মূলত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই নির্দেশিকা। কালার কোডেড জোনিং ম্যাপের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট অঞ্চলে সর্বাধিক অনুমোদিত ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। যদি সেই নির্ধারিত সীমার বেশি উচ্চতার কোনও নির্মাণ কাজ করা হয়, তবে এএআইয়ের কাছ থেকে নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা বাধ্যতামূলক।
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিকের বক্তব্য অনুযায়ী, কলকাতা বিমানবন্দরের নিকটবর্তী কাশীপুর-দমদম এলাকা এবং বেহালা ফ্লাইং ক্লাবের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। সংশোধিত বিল্ডিং নিয়ম অনুযায়ী, বিমানবন্দরের একদম পাশে অবস্থিত জায়গায় দোতলা ভবনের জন্যও অনুমোদনের সময় ইঞ্জিনিয়ারদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
কলকাতা শহরের অন্যান্য অংশে বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের ক্ষেত্রেও পুরসভার প্রতিটি বরোর ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশিকা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। কোনও ধরনের সন্দেহ বা বিভ্রান্তি দেখা দিলে বিষয়টি পুরসভার সদর দফতরের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নজর রাখতে হবে বিমানবন্দরের ২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অবস্থিত পাঁচতলা, ছয়তলা ও সাততলা ভবনগুলির উপর। যদি কোনও ভবনের উচ্চতা নির্দিষ্ট সীমা ছাড়িয়ে যায়, তাহলে পুরসভার কাছে বিশেষ ছাড়পত্র নিতে হবে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, বিমান পরিচালনার সুরক্ষায় কোনওরকম নির্মাণ বা বৃক্ষরোপণ বা অন্যান্য কার্যকলাপের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদন নিতে হবে। বিশেষ করে বিমানবন্দরের নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে হলে সেক্ষেত্রে অনুমোদন প্রয়োজন। নির্মাণকারীদের এমন এলাকায় কোনও প্রকল্প শুরু করার আগে এএআইয়ের কাছে নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে। এই সার্টিফিকেট একবার পাওয়া গেলে তা ৮ বছরের জন্য বৈধ থাকবে। প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে।