ভারতীয় টেস্ট দলের জার্সিতে আরও একবার অনবদ্য জসপ্রীত বুমরাহ। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ যেখানে শেষ করেছিলেন, ইংল্যান্ড সিরিজ সেখান থেকেই শুরু করেছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের বর্তমানের মিস্টার ডিপেন্ডেবল। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন। জসপ্রীত বুমরাহ মাঠে ফুল ফোটাবেনই, এটাই যেন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। তৃতীয় দিনে ২ উইকেট তুলে নিয়ে লিডস টেস্টের প্রথম ইনিংসেই জসপ্রীত বুমরাহ নিজের টেস্ট কেরিয়ারের ১৪তম ফাইফার নিয়ে ফেললেন, আর সেই সুবাদেই ভারতীয় দল ৬ রানের লিড নিল প্রথম ইনিংসে।
একটা সময় দেখে মনে হচ্ছিল ভারত আর ইংল্যান্ডের খেলা হচ্ছে না, বুমরাহ বনাম ইংল্যান্ডের টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে। দ্বিতীয় দিনে ৪৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে শেষ করার পর তৃতীয় দিনে ইংল্যান্ড সিরিজের যখন জবনিকা পতন করলেন বুমরাহ তখন তাঁর পরিসংখ্যান ৮3 রানে পাঁচ উইকেট। আর সেই সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বিরল রেকর্ডে ছুঁয়ে ফেলেছেন কপিল দেবকেও। বাকি তিন পেসার মিলে ২৮৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ইংল্যান্ডের বাকি পাঁচ উইকেট।
দলের বাকি বোলারদের সঙ্গে বুমরাহর এমন পরিসংখ্যানের পার্থক্য দেখেই দীনেশ কার্তিক বলছেন, ‘বুমরাহ কোহিনূর হিরের মতোই দামি, এটা আশা করব মানুষ বুঝতে পারবে। কারণ ও সব ফরম্যাটেই দলের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। যেই ফরম্যাটই হোক, যেই বলই হোক বা যেমন পরিস্থিতিই হোক না কেন, বুমরাহ নিজের সেরাটাই দেয়। আর ওর মাথা খুব ভালো কাজ করে, যে ব্যাটাররা ঠিক কি করতে চাইছে সেটা বুঝে নেয়। ক্রিকেটের ইতিহাসে যে কোনও বোলার যে ধরো ২০০র বেশি উইকেট নিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ওর বোলিং গড়ই সবথেকে ভালো। এটাই বুঝিয়ে দেয় যে ওর মধ্যে স্পেশাল কিছু রয়েছে ’।
এরপর ভারতীয় পেসারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন দলের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রীও। চিনি বলেন, ‘ভারতীয়দের মধ্যে বুমরাহ যে সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার, এই কথাটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। আমি কপিল দেবের সঙ্গেও খেলেছি, কিন্তু বুমরাহ পুরো অন্যরকম। ও যে কোনও পরিস্থিতিতে, যে কোনও ফরম্যাটে সব প্রতিপক্ষেরই কালঘাম ছুটিয়ে দিতে পারে। আমি এতদিন ভাবতাম আমার দেখা সেরা বোলার ম্যালকম মার্শাল, যেভাবে ও ব্যাটারদের মানসিকতা বুঝত। কিন্তু বুমরাহও ওর থেকে খুব পিছনে নয়। এমন অ্যাকশনে, বল যখন দেরিতে ছেড়ে বুমরাহ সুইং করায়, তখন যে কোনও ব্যাটারের পক্ষেই তা রিড করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ’।