শিবম দুবের পরিবর্তে 'কনকাশন সাব' হিসেবে এসে ‘হিরো’ হয়ে গিয়েছেন হর্ষিত রানা। কিন্তু ভারত ও ইংল্যান্ড সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তাঁকে পরিবর্ত হিসেবে নামানো নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। একাংশের অভিযোগ, বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসির নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অলরাউন্ডারের পরিবর্তে পুরোপুরি একজন পেসারকে নামিয়ে দিয়েছে ভারত। অনেকে তো কটাক্ষ করে বলতে শুরু করেছেন যে আইসিসির 'কনকাশন সাব' নিয়মকে আইপিএলের ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়ম বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ আইসিসির 'কনকাশন সাব'-র নিয়ম অনুযায়ী, যে খেলোয়াড়কে তুলে নেওয়া হচ্ছে, তাঁর ধরনের খেলোয়াড়কেই নামাতে হবে। অর্থাৎ দুবেকে তুলে নিলে ‘অলরাউন্ডার’ নামাতে হত।
খেপে লাল ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়করা
বিষয়টি নিয়ে তুমুল উষ্মাপ্রকাশ করেছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভন। তিনি বলেন, ‘কীভাবে একজন পুরোপুরি বোলার একজন ব্যাটারের পরিবর্তে নামতে পারে!!!!! যে কিনা পার্ট-টাইম বোলিং করে!!!!!!!!!!!!’ একইসুরে ইংল্যান্ডের অপর এক প্রাক্তন অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক বলেন, 'আমি বুঝতে পারলাম না যে কীভাবে শিবম দুবের জায়গায় কনকাশন সাব হিসেবে হর্ষিত রানাকে আসতে দেওয়া হল?'
আইসিসির নিয়ম কী বলছে?
আইসিসির টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের (পুরুষ) প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, ১.২.৭ ধারায় আওতায় ‘কনকাশন সাব’-র বিষয়টি আছে। ১.২.৭.৩ ধারায় স্পষ্টত বলা আছে, যে খেলোয়াড়ের 'কনকাশন' হয়েছে, তাঁর পরিবর্তে ‘লাইক-ফর-লাইক’ প্লেয়ার নামানোর অনুমোদন দেবেন ম্যাচ রেফারি। যে খেলোয়াড়কে দলে নিলে বাকি ম্যাচে তাঁর দল বাড়তি কোনও সুবিধা পাবে না। অর্থাৎ ব্যাটারের 'কনকাশন সাব' হিসেবে নামাতে হবে ব্যাটারকে। বোলারের 'কনকাশন সাব' হিসেবে নামাতে হবে বোলারকে। অলরাউন্ডারের 'কনকাশন সাব' হিসেবে নামাতে হবে অলরাউন্ডারকে।
সেই বিষয়টির সঙ্গে আইসিসির নিয়মে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে। ১.২.৭.৪ ধারা অনুযায়ী, 'কনকাশন সাব' হিসেবে যে খেলোয়াড়কে বেছে নেওয়া হয়েছে, তাঁকে 'লাইক-ফর-লাইক' হিসেবে বিবেচনা করার ক্ষেত্রে ম্যাচ রেফারি এই বিষয়টা খতিয়ে দেখবেন, যে খেলোয়াড়কে তুলে নেওয়া হচ্ছে, তিনি ম্যাচের বাকি সময়টা কোন ভূমিকা পালন করতেন এবং সংশ্লিষ্ট পরিবর্ত খেলোয়াড় কোন ভূমিকা পালন করবেন। সেইসঙ্গে আইসিসির নিয়মে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, ম্যাচ রেফারি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত।
হর্ষিতই ম্যাচের মোড় ঘোরানোয় আরও বিতর্ক
আর ভারতও পুণেতে ম্যাচ রেফারির অনুমতি পেয়েই হর্ষিতকে ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে নামায়। তিনি ম্যাচের ‘হিরো’ ওঠায় বিতর্কের মাত্রা আরও বেড়েছে। 'কনকাশন সাব' হিসেবে চার ওভারে ৩৩ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। আউট করেন লিয়াম লিভিংস্টোন, জেকব বেথেল এবং জেমি ওভারটনকে।
তিনটি উইকেটই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ম্যাচের ১৯ তম ওভারে ছয় রান খরচ করে ওভারটনকে আউট করে ইংরেজদের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন। আর তার ফলে ১৫ রানে জিতে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ পকেটে পুরে নিয়েছে। আপাতত সিরিজের ফল ৩-১।