বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ডের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির পর বেশিদূর এগোলো না শান্তদের ইনিংস। ৩২ মিনিটের মধ্যে বাকি থাকা ৩ উইকেট তুলে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড। এদিন দুটি উইকেট নিলেন এজাজ প্যাটেল, একটি উইকেট নিলেন ইশ সোধি। একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তিনি এদিন অপরাজিত থাকেন। দল থামার আগে তিনি পেলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি। তাঁর কল্যাণেই শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে পারল বাংলাদেশ। এদিনের ম্যাচে মুশফিকুর রহিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব ফর্ম্যাট মিলিয়ে তাঁর শততম ৫০-এর বেশি স্কোর নথিভুক্ত করেছেন। তিনি ৫০তম ক্রিকেটার হিসেবে এই মাইলফলক অর্জন করলেন। এই কৃতিত্ব অর্জনকারী অন্য বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা হলেন তামিম ইকবাল এবং শাকিব আল হাসান।
সিলেট টেস্ট জিততে হলে নিউজিল্যান্ডের এখন দরকার ৩৩২ রান। বাংলাদেশ দল তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়েছে ৩৩৮ রান করে। নাজমুল হোসেনের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ১০৫ রান। মুশফিকুর রহিম ৬৭ ও শেষের দিকে মেহেদি হাসান মিরাজের অপরাজিত ৫০ রান করেন। তিন জনের ব্যাটিং সৌজন্যে লড়াই করার মতো রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দলের চতুর্থ দিনের শুরুটাই ভালো হয়নি। তৃতীয় দিনে শতক করা নাজমুলকে দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। টিম সাউদির লেগ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। আগের দিনের ১০৪ রানের সঙ্গে আর মাত্র ১ রান যোগ করতে পেরেছেন তিনি। ১০ চারে সাজিয়েছেন ১৯৮ বলের ইনিংস। তাঁর বিদায়ে ভেঙেছে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৯৮ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। অভিষেক করা শাহাদাত হোসেনের ইনিংস বড় হয়নি। ১৮ রান করে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান তিনি। ইশ সোধির ৭৬তম ওভারে ভুল লাইনে খেলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। তখন দলের রান ৫ উইকেটে ২৪৮ রান ছিল। মুশফিকের সঙ্গে এরপর যোগ দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৩ ওভার পরই নতুন বল নেয় নিউজিল্যান্ড। তবে নতুন বলের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ে বড় ধাক্কাটা দিয়েছেন এজাজ প্যাটেল। ৮৫তম ওভারে তাঁর স্টাম্প তাক করা বলে ভুল লাইনে খেলে এলবিডব্লিউ হন মুশফিক। ৭ চারে ১১৬ বলে তিনি করেছেন ৬৭ রান। এরপর আউট হন নুরুল হাসান। ২৭ বলে ১০ রান করে গ্লেন ফিলিপসের বল ক্রিজ ছেড়ে খেলতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বসেন তিনি।
অবশ্য চাপের মুখে বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং বাংলাদেশের লিডটাকে এগিয়ে নিয়ে যান মিরাজ। তবে সঙ্গ দিতে পারেননি নঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম। ইশ সোধির গুগলি না বুঝে শর্ট লেগে ক্যাচ তুলেছেন নঈম (৪)। তাইজুল (০) মিড অনের ওপর দিয়ে এজাজ প্যাটেলের বল তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন। শরিফুল ইসলাম কিছুক্ষণ টিকে থাকায় রক্ষা। মিরাজ শেষ উইকেট জুটিতে শরিফুলকে নিয়ে ২২ বলে ২৬ রান যোগ করেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং। এজাজকে ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হন শরিফুল (৭ বলে ১০)। বাংলাদেশের ইনিংসও থামে ৩৩৮ রানে। মিরাজ অপরাজিত ছিলেন ৭৬ বলে ৫০ রানে। ৩৩২ রান তাড়া করতে নেমে ৩৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। টম ল্যাথাম শূন্য রানে আউট হন। কেন উইলিয়ামসন ২৪ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। এরপরে হেনরি নিকোলস ২ রান করে মেহদি হাসান মিরাজের শিকার হন। এখনও পর্যন্ত শরিফুল ইসলাম একটি ও তাইজুল ইসলাম একটি উইকেট সংগ্রহ করেছেন।