সৌমিলী রায়
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে বলেছেন, তার হত্যাকাণ্ড সম্ভবত দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনার অবসান ঘটাবে।
ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজও একই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, খামেনির পরিণতি ইরাকের প্রাক্তন নেতা সাদ্দাম হোসেনের মতো পরিণতি হতে পারে। জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তথাকথিত সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঠিক অবস্থান জানে এবং তাকে 'বের করে দিতে পারে', কিন্তু তারা তা না করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, অন্তত এখনকার জন্য নয়।
এদিকে ইরানের পতন হলে প্রশ্ন উঠছে, খামেনির উত্তরসূরি কে হবেন?
সম্ভাব্য নেক্সট-ইন-লাইন তালিকায় কারা রয়েছেন?
মোজতাবা খামেনি
১. মোজতাবা খামেনি হলেন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির দ্বিতীয় পুত্র এবং তিনিই হতে পারেন সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তরসূরি। ১৯৬৯ সালে জন্ম নেওয়া মোজতবা ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি'র সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মোজতবা বর্তমানে দেশের প্রশাসনে শক্তিশালী প্রভাব সহ একজন মাঝারি পর্যায়ের আলেম।
আলিরেজা আরাফি
২. আলিরেজা আরাফি খামেনির একজন অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহযোগী। আরাফি বিশেষজ্ঞ পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান, গার্ডিয়ান কাউন্সিলের সদস্য এবং কোমে শুক্রবারের নমাজের নেতাসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। ইরানের ক্ষমতা কাঠামো সম্পর্কে তার জ্ঞান ও বোঝাপড়া রয়েছে।
আলী আসগর হেজাজি
৩. আলি আসগর হেজাজি খামেনির কার্যালয়ে রাজনৈতিক নিরাপত্তা বিষয়ক দেখাশোনা করেন। প্রশাসনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পরিচিত, তিনি ইরানের গোয়েন্দা পরিচালনার তত্ত্বাবধান করছেন এবং প্রতিরক্ষা ও কৌশলের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অপরিবর্তনীয় ভূমিকা পালন করছেন।
মহম্মদ গোলপেয়গানি
৪. মহম্মদ গোলপেয়গানি দীর্ঘদিন ধরে খামেনির কার্যালয়ের চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনি তার অন্যতম বিশ্বস্ত সহযোগী। খামেনির অত্যন্ত বিশ্বস্ত হিসাবে পরিচিত, ইরানের প্রশাসনিক ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে তার বিস্তৃত জ্ঞান রয়েছে।
৫. বিশেষজ্ঞদের সমাবেশ ইরানের সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সমাবেশকে উত্তরাধিকারের ক্ষমতা দিয়েছে। সিনিয়র আলেমদের ৮৮ সদস্যের একটি সংস্থা, যারা প্রতি আট বছর পর পর নির্বাচিত হন, তারা গোপনে আলোচনা করবেন এবং এমনকী একক সর্বোচ্চ নেতার পরিবর্তে নেতৃত্ব পরিষদ নিয়োগে জড়িত হবেন বলেও আশা করা হচ্ছে। ইজরায়েলের হুমকি প্রত্যাখ্যান করে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বুধবার অঙ্গীকার করেছেন যে, তার দেশ তার শত্রু দেশের শাসকদের প্রতি কোন দয়া প্রদর্শন করবে না। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী ইহুদিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর জবাব দিতে হবে। আমরা ইহুদিবাদীদের কোনো দয়া দেখাব না।
তবে এবার খামেনি জমানার অবসান ঘটলে তাঁর উত্তরাধিকারী কে হবেন সেটাই এখন দেখার।