ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) আসন্ন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (IPL) নিজেদের শিরোপা ধরে রাখতে মরিয়া। চতুর্থ আইপিএল শিরোপা জেতার লক্ষ্যে এই বছর কেকেআর গত বারের প্রায় পুরো দলকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছে। তবে গত বারের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারকেই তারা ধরে রাখেনি। এবার অধিনায়ক হিসেবে কেকেআর বেছে নিয়েছে অভিজ্ঞ অজিঙ্কা রাহানেকে।
নেতৃত্বের পরিবর্তন, তবে মূল কার্যত ধরে রাখা
প্রবীণ ভারতীয় ব্যাটসম্যান অজিঙ্কা রাহানেকে নতুন অধিনায়ক নিযুক্ত করা হয়েছে, শ্রেয়স আইয়ারের জায়গায়। শ্রেয়স পঞ্জাব কিংসকে নেতৃত্বে দিচ্ছেন। রাহানের ঠাণ্ডা স্বভাব এবং অভিজ্ঞতা কেকেআর স্কোয়াডে স্থিতিশীলতা আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কলকাতা নাইট রাইডার্স তাদের ২০২৪ সালের শিরোপা জয়ী দল থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে ধরে রেখেছে, যার মধ্যে রয়েছেন গতিশীল অলরাউন্ডার সুনীল নারিন এবং আন্দ্রে রাসেল, রহস্যময় স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী, পাওয়ার-হিটার রিঙ্কু সিং এবং রমনদীপ সিং, পেসার হর্ষিত রানা। ফের শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে এই প্লেয়ারদের উপরেই ভরসা করবে কেকেআর।
নতুন সংযোজন এবং স্কোয়াডের গভীরতা
কেকেআর নতুন মরশুমের আগে নিজেদের শক্তি বাড়াতে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি'কক এবং রহমানউল্লাহ গুরবাজ, অলরাউন্ডার বেঙ্কটেশ আইয়ার এবং মইন আলি, সেই সঙ্গে পেসার এনরিখ নরকিয়া এবং স্পেনসার জনসনকে দলে নিয়েছে। এতে ব্যাটিং এবং বোলিং উভয় বিভাগ উল্লেখযোগ্য ভাবে শক্তিশালী হয়েছে এবং নাইটদের দলে নিঃসন্দেহে বাড়তি গভীরতা যোগ হয়েছে।
কেকেআর-এর শক্তি-
গতিশীল অলরাউন্ডার: সুনীল নারিন এবং আন্দ্রে রাসেল ব্যাট এবং বল উভয় ক্ষেত্রেই ম্যাচ জয়ী হিসেবে প্রমাণিত। দলকে ভারসাম্য দেন তাঁরা। সেই সঙ্গে তাঁদের আগ্রাসী মনোভাব দলকে উজ্জীবিত করে, আগুন পারফরম্যান্স করার জন্য।
মিস্ট্রি স্পিন জুটি: নারিন এবং বরুণ চক্রবর্তী জুটি স্পিন বিভাগে কেকেআর-এর বড় শক্তি। এঁরা ম্যাচের যে কোনও পর্যায়ে উইকেট নিতে সক্ষম।
হার্ড-হিটিং ফিনিশার: রাসেল এবং রিঙ্কু সিং লোয়ার অর্ডারে শক্তিশালী পাঞ্চ যোগ করেন, ডেথ ওভারে দ্রুত রান তুলতে সক্ষম।
সলিড টপ অর্ডার: অজিঙ্কা রাহানে এবং কুইন্টন ডি'ককের অভিজ্ঞতা বড় প্রাপ্তি। স্ট্রাইক চেঞ্জ করা এবং প্রয়োজনের সময় দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা রাখে।
আরও পড়ুন: ‘স্টুপিড, স্টুপিড, স্টুপিড’… গাভাসকরের নকল করতে গিয়ে নিজেকেই বোকা বললেন পন্ত- ভিডিয়ো
কেকেআর-এর দুর্বলতা-
অনভিজ্ঞ পেস অ্যাটাক: এনরিখ নরকিয়া থাকা সত্ত্বেও, পেস আক্রমণে সামগ্রিক অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। হর্ষিত রানা তুলনামূলক ভাবে নতুন। এদিকে উমরান মালিক চোটের কারণে আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছেন। যার ফলে, চেতন সাকারিয়া, স্পেনসার জনসন এবং বৈভব অরোরার মতো তরুণ পেসারদের উপর নির্ভর করতে হবে দলকে।
নেতৃত্বে বদল: শ্রেয়স আইয়ারকে ধরে রাখার চেষ্টাই করেনি কেকেআর। শ্রেয়সের বদলে রাহানেকে অধিনায়ক করা হয়েছে। রাহানের ফর্ম নিয়ে যেখানে সংশয়, সেখানে তাঁর নেতৃত্ব নিয়েও মরশুম শুরুর আগেই প্রশ্ন উঠে গেছে।
গম্ভীরের না থাকা: ২০২৪ সালে কেকেআর-কে চ্যাম্পিয়ন করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর। তিনি পুরো দলকে এক সুতোয় বেঁধে দিতে চেয়েছিলেন। গৌতির না থাকাটা এই মরশুমে নাইটদের জন্য কিছুটা চাপেরই হবে।
কেকেআর-এর অনুকূল পরিস্থিতি-
মোমেন্টাম গড়ে তোলা: ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কেকেআর তাদের বিজয়রথ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইবে। এবং শিরোপা ধরে রাখার দুর্দান্ত সুযোগ রয়েছে তাদের সামনে। সেই মোটিভেশনটা রয়েছে পুরো দলের বড় হাতিয়ার হয়ে।
নতুন অধিনায়কত্বের দৃষ্টিভঙ্গি: রাহানের নেতৃত্ব দলকে আরও সংগঠিত হতে সাহায্য করতে পারে। রাহানের শান্ত স্বভাব সঙ্কটের সময় পরিস্থিতি পরিচানা করতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: IPL 2025-এ খেলার সুযোগ পেতেই PSL-কে গুডবাই MI তারকার, প্রোটিয়া প্লেয়ারকে আইনি নোটিশ PCB-র