১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ক্রিকেট ইতিহাস নিয়ে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল। দুই মিনিট একুশ সেকেন্ডের সেই ভিডিয়োতে ১৯৫২ সালে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক অভিষেক থেকে ১৯৯২ বিশ্বকাপ জয়, সঙ্গে পাকিস্তানের নানা সাফল্যের কাহিনী রয়েছে। ভিডিয়োটি ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের লড়াই দিয়ে শেষ হয়েছে। অথচ সেখানে পাক ক্রিকেটের অন্যতম স্তম্ভ বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক এবং প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেই রাখা হয়নি।
পাকিস্তান ক্রিকেটের অফিশিয়াল পেজ থেকে পোস্ট করা সেই ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আক্রমও ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তিনি পিসিবি-কে ভিডিয়োটি ডিলিট করে ক্ষমা চেয়ে নিতে বলেন। সমালোচনা পড়ে অবস্থা বেগতিক বুঝে নিজেদের ভুল সংশোধন করে নেয় পিসিবি। ভিডিয়োটি পুনরায় তারা প্রকাশ করে। যেখানে এখন ইমরান খানকে দেখানো হয়েছে। আপডেট হওয়া ভিডিয়োতে ইমরানকে দু'বার দেখা গিয়েছে। এবং উল্লেখযোগ্য ভাবে, ১৯৯২ বিশ্বকাপ জয়ের আইকনিক ক্লিপিংসে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে গর্ব প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেষ দু'টি বিশ্বকাপে কোহলিকে চারেই খেলাতে চেয়েছিলাম- অন্দরমহলের কথা ফাঁস শাস্ত্রীর
ভিডিয়োটি পাকিস্তানের অবিস্মরণীয় বিশ্বকাপ জয় এবং ইমরান খানের সঙ্গে একটি ফুটেজ ব্যবহারের পাশাপাশি ক্যাপশনে প্রাক্তন অধিনায়কের তাৎপর্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইমরানকে আগে বাদ দেওয়া নিয়ে পিসিবির ব্যাখ্যা ছিল যে, ভিডিয়োটির দৈর্ঘ্যের কারণে ‘সংক্ষিপ্ত’ করা হয়েছিল। তবে বাচ্চাদের মতো এমন যুক্তি হাস্যকরই বটে। সকলেরই দাবি, রাজনৈতিক কারণেই বাদ দেওয়া হয় ইমরানকে। যদিও কিছু দিন আগেই ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে খেলতে আসার ছাড়পত্র দেওয়ার পর সেই দেশের বর্তমান সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল, তারা রাজনীতির থেকে ক্রিকেটকে আলাদা করে রাখে। অথচ রাজনৈতিক কারণেই ইমরান খানের মতো কিংবদন্তিকে বাদ দিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেটের ইতিহাসের ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপে রাহলকে একাদশে রাখার ভাবনা বাড়াবাড়ি- সতর্ক করলেন ভারতের প্রাক্তন কোচ
ইমরানকে বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে পিসিবি লিখিত ভাবে জানিয়েছে, ‘২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রচার শুরু করেছে পিসিবি। সে রকমই একটি ভিডিয়ো ২০২৩, ১৪ আগস্ট আপলোড করা হয়েছিল। দৈর্ঘ্যে বেড়ে গিয়েছিল বলে ভিডিয়োটি সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছিল এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্লিপ মিস হয়ে যায়। ভিডিয়োটি সংশোধন করা হয়েছে।’
পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসে প্রাক্তন অলরাউন্ডার ইমরান খান একটি স্তম্ভ। তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ১৯৭১-১৯৯২ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আর তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে ৭.৫০০ রান করেছিলেন। পাশাপাশি টেস্ট এবং ওডিআই মিলিয়ে ৫০০টিরও বেশি উইকেট নিয়েছিলেন। ইমরান খানের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে পাকিস্তান ইতিহাস লিখেছিল। তারা সেবার বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল। আর সেই সাফল্যে বড় ভূমিকা ছিল ইমরানের। পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন করতে একজন ফাস্ট বোলার এবং মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন।