কালের গতিতে নানা দাবি উঠে থাকে। তা কেউ মানেন, আবার কেউ মানেন না। তবে যুক্তি যদি সঠিক থাকে তাহলে তা মেনে নেন অনেকেই। এবার রাস্তার নাম বদলের ক্ষেত্রে তেমনই নজির দেখা গেল। বড়দিনের প্রাক্কালে পার্ক স্ট্রিট এলাকার ‘শর্ট স্ট্রিট’ রাস্তার নাম পরিবর্তন হয়ে গেল। গত বৃহস্পতিবার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বড়দিনের জমায়েতের অনুষ্ঠান থেকে ওই রাস্তার নতুন নামকরণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার থেকে ওই রাস্তার নাম হবে ‘সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার সরণি’। এমন দাবি বা আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাখা হয়েছিল। আর সেই আর্জিতে সাড়া দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে সূত্রের খবর।
হাতে আর বেশি দিন বাকি নেই। আর তিনদিন পরই বড়দিন পালিত হবে গোটা রাজ্যে। ইতিমধ্যেই সেই দিন যাতে মহাসমারোহে মেতে ওঠে বাংলার রাজপথ তার জন্য আগে গিয়ে অ্যালেন পার্কে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী সকলকে আগাম বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছেন। আর তখনই ঘোষণা করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেন্ট জেভিয়ারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে শর্ট স্ট্রিটের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে পেরে ভীষণ খুশি। ইতিমধ্যেই কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ওই রাস্তায় বোর্ড বসানোর নির্দেশ দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পরিণতি মাথায় রেখে আগামীতে দেশ পরিচালনা হবে, হুঁশিয়ারি শহিদুল্লার
বড়দিনের প্রাক্কালে নিজের লেখা গান ও সুর সামনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা গেয়েছেন খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পী শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা শুনে সকলের ভাল লাগবে বলে মনে করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুকে সে কথা তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই রাস্তার নাম বদলের ঘোষণার পর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, ‘বড়দিনের আগে সমস্ত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের একটা জন্য উপহার দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ আসলে এই নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব আসে ডেরেকের পক্ষ থেকে। সেই প্রস্তাবে সাড়া দেন মুখ্যমন্ত্রী। যার ফলে ‘শর্ট স্ট্রিটের’ নাম বদলে হয়ে গেল ‘সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার সরণি’ বলে সূত্রের খবর।
এই ঘোষণা শোনার পরই খুব খু্শি হয়েছেন খ্রিস্ট ধর্মের মানুষজন। কারণ তাঁদেরও মনে এমন ইচ্ছা ছিল। যা বেরিয়ে যায় ডেরেকের মুখ দিয়ে। আর তা সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়িত করে দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ইতিহাসে আছে, ষোড়শ শতকে এক পর্তুগিজ সম্রাটের দূত হয়ে ভারতের গোয়া রাজ্যে এসেছিলেন সেন্ট জেভিয়ার। তারপর সেখান থেকেই দেশের নানা রাজ্যে এসে ধর্মপ্রচার শুরু করেন। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এই নামে। সেই সময় বহু মানুষ তাঁর অনুগামী হয়ে খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত হন। এবার তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই এমন রাস্তার নাম বদলের সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী।