আজ, তৃণমূল কংগ্রেসের একুশে জুলাই। কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করেছেন শহর কলকাতার ধর্মতলার প্রাণকেন্দ্রে। আর এই হাইভোল্টেজ সমাবেশ হচ্ছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার পর। এই আবহে ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ থেকে বাংলার মানুষজন ফিরে আসার ক্ষেত্রেও খেয়াল রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবেশী বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির জেরে দলে দলে দেশে ফিরছেন বাংলাদেশে পড়তে যাওয়া ভারতীয়রা। তাঁদের যাতে কোনওরকম সমস্যায় পড়তে না হয় তা নিয়ে এবার স্পষ্ট বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুয়াদের ফেরাতে রাজ্য সরকার সদা সক্রিয় বলে জানালেন তিনি।
এদিকে আজ, রবিবার এমন পরিস্থিতি নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে একটি বার্তা পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘যাঁরা ফিরছেন এই বাংলায়, তাঁদের সবরকম সাহায্য ও সহায়তা করার জন্য রাজ্য প্রশাসনকে বলেছি আমি। প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী আজ হিলি সীমান্তে পৌঁছেছেন এবং তাঁদের বেশিরভাগই নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জনের সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। সেই সমস্তরকম সাহায্য তাঁদের করা হয়েছে। বিপদের মুখে একতাই শক্তি।’ এভাবেই প্রতিবেশী দেশ থেকে ফেরা ভারতীয়দের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ অবস্থার দিকে বিশেষ নজর আছে রাজ্য সরকারের। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লির সঙ্গে কথা হয়েছে নবান্নর। রাজ্যের কেউ ওপার বাংলায় আটকে রয়েছেন কিনা সেটা দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জিও জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকী নয়াদিল্লিতে রাজ্যের রেসিডেন্সিয়াল কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই পরিস্থিতির বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগে থাকার। গতকাল শনিবার এই তথ্য দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: একুশে জুলাইয়ের দিনই বিজেপি কর্মীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার, মহেশতলায় আলোড়ন
এছাড়া বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির জেরে সেদেশের কোনও নাগরিক যদি এই রাজ্যে আশ্রয় চায়, তাহলে তাঁকে ফেরাবে রাজ্য সরকার। আজ এমন বার্তাও একুশের সমাবেশ থেকে স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। প্রাণ গিয়েছে শতাধিক মানুষের। জারি হয়েছে কার্ফু। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার। দু’দেশের হাই কমিশনের সহযোগিতায় এখনও পর্যন্ত ৯৯৮ জন পড়ুয়াকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। চার হাজারের বেশি ভারতীয় পড়ুয়া যাঁরা আটকে আছেন তাঁদের আকাশপথে ফিরিয়ে আনতে দু’দেশের হাইকমিশন চেষ্টা করছে। শহিদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি কেউ আটকে থাকেন, আমরা তাঁদের ফেরাবার ব্যবস্থা করব। আমি শুধু এইটুকু বলতে পারি, বিপদে পড়ে কেউ যদি আমাদের দরজায় কড়া নাড়ে, আমরা তাঁদের পাশে থাকব।’