ডিভিসির লাগাতার জল ছাড়ার জেরে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা বন্যাদুর্গত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শাক–সবজির মূল্যবৃদ্ধি চাপে ফেলে দিয়েছে আমজনতাকে। এবার সেটা ঠেকাতে আজ, শুক্রবার একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সবজির বাজারদর এখন আগুন। বন্যার কারণে সবজি চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে এই পরিস্থিতির সামাল দিতেই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বৈঠক ডেকেছেন। খোলা বাজারে এখন সবজির দাম লাগামছাড়া। দাম বৃদ্ধির জেরে আমজনতার উঠছে নাভিশ্বাস। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে বৈঠক ডাকলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। এখানে জেলাশাসকরাও থাকবেন।
এদিকে দুর্গাপুজোর মুখে রাজ্যে বন্যা হয়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ এখন শুধু বানভাসি বাংলা। অতি বৃষ্টিতে কার্যত চাষাবাদের ভয়ানক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার জলে নষ্ট হয়েছে জমির ফসল। তাই খোলা বাজারে দাম বাড়ছে কাঁচালঙ্কা, পেঁয়াজ, বেগুন, কমড়ো, পটলেরও। তার জেরে দুর্গাপুজোর আগে বাজারে যাতে সবজির জোগান স্বাভাবিক থাকে সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সুফল বাংলার স্টলেও পর্যাপ্ত সবজি মজুত রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। নয়া নীতি নিয়েছে নবান্ন। ‘কৃষকের দুয়ারে’ পৌঁছে গিয়ে তাঁদের উৎপাদিত সবজি সরসারি কিনছে রাজ্য সরকার। আর সেই সবজি বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা–সহ বাংলার নানা অঞ্চলের মানুষ কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তাতে উপকৃত হচ্ছেন মানুষজন বলে খবর।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোয় প্রাক্কালেই হাতে এল নতুন চাকরি, এবার উৎসবে ফিরলেন চাকরিপ্রার্থীরা
অন্যদিকে আজ টাক্স ফোর্সের বৈঠকে জেলাগুলিতে শাক–সবজির দাম নিয়ে রিপোর্ট নেবেন মুখ্যসচিব। আর তারপর বৈঠক করা হবে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির সঙ্গেও বলে সূত্রের খবর। সামনে দুর্গাপুজো। তাই এই সুফল বাংলার স্টলের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। বাজারে এখন সবজিতে হাত দিলেই লাগছে ছ্যাঁকা। তাই এমন উদ্যোগ। ফসল নষ্ট হচ্ছে। তাই আলু, পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। মানুষকে তার জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই কারণে কৃষি বিপণন দফতর নানা এলাকায় ১০৯টি অস্থায়ী কাউন্টার চালু করেছে। এই অস্থায়ী কাউন্টারের জন্য স্থানীয় কৃষকদের বাড়ি থেকে সরাসরি ফসল কিনছে রাজ্য সরকার। এই নয়া নীতির ফলে সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে কৃষকদের।
এছাড়া নবান্ন সূত্রে খবর, টাস্ক ফোর্স নামিয়েও দাম অনেকটা কমানো যায়নি। খানিকটা কমে গিয়েছে ঠিকই। তিন মাস আগে বাজারে আলুর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। সেটা এখন ৩২ থেকে ৩৪ টাকায় মিলছে। এটাও বেশি দাম বলে মনে করে রাজ্য সরকার। তাই কৃষকদের দুয়ারে গিয়ে সবজি–সহ আনাজপাতি কিনছে রাজ্য সরকার। তাতে বাজারে সবজির দাম কমবে। চলতি বছরের জুলাই মাসে নবান্নে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘১০ দিনের মধ্যে সবজির দাম কমাতে হবে’। এবার সেটাতে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে।