মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন ৩০ এপ্রিল থেকে গরমের ছুটি পড়বে সরকারি স্কুলগুলিতে। নবান্ন থেকে সে কথা ঘোষণা করার পর আজ ৩০ এপ্রিল। সুতরাং পড়ুয়ারা আর স্কুলমুখো হবে না। বাড়িতে হোমওয়ার্ক এবং বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলা হয়েছে। আজ থেকে গরমের ছুটি পড়ার অর্থ বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকবে বিদ্যালয়। তাই একদিন আগেই স্কুল ছাড়ার আগে পড়ুয়াদের নানা কাজ করতে দেখা গিয়েছে। এই আবহে সেপ্টেম্বর মাসে উচ্চমাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে। পড়ুয়াদের পরীক্ষা প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তাই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে অনলাইন ক্লাসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
এখন কিছুদিন স্কুলে আসতে হবে না। তাই পড়ুয়ারা সেগুলির বিশেষ পরিচর্যা করলেন। গ্রামীণ বহু সরকারি স্কুলে দেখা গেল, পড়ুয়ারা গাছে জলের পাত্র ঝুলিয়ে দিয়েছে। তার পর গাছকে জড়িয়ে ধরে ভাল থাকার কথা জানানো। আবার স্নেহের চুম্বন দিতেও দেখা গেল। গরম তো পড়েছে। আর তৃতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টার মিলিয়ে ২০২৬ সালের উচ্চ মাধ্যমিকের মূল্যায়ন করা হবে। তাই অনলাইন ক্লাসের প্রয়োজনীয়তা আছে। গরমের ছুটিতে অনলাইন ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘পড়ুয়া এবং শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ছুটির দিনে অনলাইন ক্লাস করবেন। পরীক্ষার প্রস্তুতিতে যাতে পড়ুয়ারা পিছিয়ে না পড়ে তাই এমন সিদ্ধান্ত।’
আরও পড়ুন: আজ দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন, জঙ্গি হানার সতর্কতা জারি করল গোয়েন্দা দফতর
এপ্রিল মাস আজ শেষ। মে মাস থেকে গরম আরও বাড়বে। তখন রাস্তায় বের হওয়া বেশ চাপের। আর ছোট ছোট পড়ুয়ারা যদি স্কুলে যায় তাহলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। স্কুল ছুটি থাকলে পরিবারের আশ্রয়ে তারা ভাল থাকবে। প্রত্যেক জেলারই গ্রামের স্কুলে আজ থেকে গরমের ছুটি পড়ে যাবে। এই অনলাইন ক্লাস নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, ‘উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নির্দেশ দিলেও আগে তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা একদমই অনলাইন ক্লাসে আগ্রহী নয়। তাছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ক্লাস করার আগ্রহ দেখালেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি অনেক কম থাকে। অবশেষে বিষয়টি প্রহসনে পরিণত হয়।’
এখানে আর একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের এসএসসি’র প্যানেল বাতিল হয়েছিল। তাতে ২৬ হাজার শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিল হয়ে যায়। তারপর রাজ্যের আবেদনে যোগ্যদের স্কুলে গিয়ে পড়ানোর নির্দেশ দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তার জেরে নতুন করে একটা সমস্যা দেখা দেয়। কে যোগ্য আর কে অযোগ্য? তাই নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। এরপর তালিকা প্রকাশ করা হয়। যা পৌঁছে যায় ডিআই অফিসগুলিতে। তার ভিত্তিতে স্কুলে যেতে শুরু করেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। আজ থেকে তাঁদেরও ছুটি। স্কুলে যেতে হবে না। আবার স্কুল খুললে তাঁরা যাবেন। আপাতত ছুটি।