এখন আর দুর্গাপুজোর সময় মদের দোকান বন্ধ থাকে না। তাতে কালোবাজারি রোখা গিয়েছে। রোজ দু’বেলা করে মিলেছে মদ। মদ্যপায়ীরা তাই চান। দুর্গাপুজোর ছুটিতে মদ খাবো না তাই কখনও হয়—এমনই কথা শোনা গিয়েছে মদের দোকানের আনাচে–কানাচে। গত কয়েক বছরে লক্ষ্য করা গিয়েছে দুর্গাপুজোর সময় আবগারি দফতর প্রচুর টাকা লাভ করেছে।
বেয়ারা চালাও ফোয়ারা....। দুর্গাপুজোর পাঁচ দিনে কার্যত এভাবেই মদের ফোয়ারা উঠেছে রাজ্যে। দেদার বিক্রি হয়েছে মদ। দোকান থেকে শুরু করে বার, রেস্তোরাঁয় ব্যাপক হারে বিক্রি হয়েছে মদ। দোকান থেকে মদের বোতল কিনে নিয়ে গিয়ে অনেকের বাড়িতেই বসেছে মজলিশ। আর সেখানেই উঠেছে ফোয়ারা। তবে এই বিপুল পরিমাণ মদ বিক্রি হওয়ায় প্রচুর টাকা এসেছে রাজ্যের কোষাগারে। আবগারি দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ওই পাঁচ দিনে জল পুলিশের আন্ডারে ছিলেন সুরাপ্রেমীরা। আর তাতেই এমন লক্ষ্মীলাভ।
এদিকে প্রত্যেক বছরই দুর্গাপুজোর সময় ব্যাপক পরিমাণে মদ বিক্রি হয়। আর তা করে দেদার লাভ উঠে আসে রাজ্যের কোষাগারে। এবারও তার ব্যতীক্রম হয়নি। সেটা বোঝা যাচ্ছে আবগারি দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যানে। আবগারি দফতর সূত্রে খবর, এবার দুর্গাপুজোর পাঁচদিনে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে মদ বিক্রি করে। এখন বাকি আছে কালীপুজো। তখনও ফোয়ারা উঠবে বলে আশাবাদী আরগারি দফতর। তার উপর এখন একটা ঠাণ্ডা ভাব বিরাজ করছে বঙ্গে। তাই সুরাপ্রেমীরা মদ ঢালছে কণ্ঠে। সেটাই বাড়াচ্ছে আয়। উলটে সুরাপ্রেমীরা বলছেন, মদ্যপানের বিরুদ্ধে যারা তাদের মাথায় পড়ুক বাজ।
অন্যদিকে মদের দোকান দুর্গাপুজোর সময় খোলা থাকা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেকথা শুনতে রাজি নন সুরাপ্রেমীরা। দেশি–বিলেতি মদ সমানতালে বিক্রি হয়েছে। আর সব দিন মদের দোকান খোলা থাকায় কোনও কালোবাজারি হয়নি। ফলে দেদার বিক্রি হয়েছে মদ। এমনকী দুর্গাপুজোর পাঁচদিন মদ বিক্রি করে সেরার সেরা তালিকায় উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুর। কারণ ৩০ কোটির ‘আয়’ এনেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। তবে উৎসবের দিনগুলিতে বিয়ারের চাহিদা ছিল তুঙ্গে বলে আবগারি দফতর সূত্রে খবর। ষষ্ঠীর দিনই ৫ কোটি ১১ লক্ষ ৫ হাজার ২৫৭ টাকার মদ বিক্রি হয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? আগের নিয়ম সব পাল্টে গিয়েছে। এখন আর দুর্গাপুজোর সময় মদের দোকান বন্ধ থাকে না। তাতে কালোবাজারি রোখা গিয়েছে। আর রোজ দু’বেলা করে মিলেছে মদ। মদ্যপায়ীরাও তাই চান। দুর্গাপুজোর ছুটিতে মদ খাবো না তাই কখনও হয়—এমনই কথা শোনা গিয়েছে মদের দোকানের আনাচে–কানাচে। গত কয়েক বছরে লক্ষ্য করা গিয়েছে দুর্গাপুজোর সময় আবগারি দফতর প্রচুর টাকা লাভ করেছে। শুধু মদ বিক্রি করে। মহাষষ্ঠী থেকে দশমী—যে পরিমাণ মদ বিক্রি হয়েছে তা অন্যান্যবারের তুলনায় রেকর্ড বলে মনে করছে আবগারি দফতর। আর মদ্যপায়ীরা বলছেন—‘খাও খাও বুঁদ হয়ে ডুবে যাও’।