স্বামীর মারধরের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ স্ত্রী। সেখানে স্ত্রীয়ের আর্জি, তিনি সংসার করতে রাজি আছেন যদি আদালত গ্যারান্টি দেয় স্বামী তাঁকে আর মারধর করবে না। এই আর্জি শুনে হতবাক হয়ে যান বিচারপতি। তারপর বিচারপতির বলেন, ‘বাড়িতে থাকবেন আপনারা দু’জন। আপনাকে যে মারধর করা হবে না, তার নিশ্চয়তা আমি কেমন করে দেব?’ এজলাসে তখন হাসির রোল ওঠে।বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, ঠিক ১০ বছর আগে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের মহিলা কর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিএসএফ সুবীর মণ্ডলের। তখন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করার অভিযোগ ওঠে সুবীরের বিরুদ্ধে। আর মামলা দায়ের হয়। এই পরিস্থিতিতে চাপে পড়ে ২০২০ সালে সুবীর মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে বিয়ে করেন। স্ত্রীয়ের আইনজীবী সুস্নিগ্ধ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, বিয়ের পরই তাঁর উপর অত্যাচার শুরু করেন সুবীর। বধূ নির্যাতনের (৪৯৮ ধারায়) অভিযোগও দায়ের হয়। তারপর কী ঘটল আদালতে? এই অবস্থায় সুবীর নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিন নেন। সেই জামিন খারিজের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন স্ত্রী। তাই সুবীরকে কলকাতা হাইকোর্টে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ সুবীরকে আদালতে হাজির করে। এরপর শুরু হয় শুনানি। সেখানে স্ত্রীর আইনজীবী আদালতে খোরপোষের দাবি করেন। সুবীরকে বিচারপতি দেবাংশু বসাক প্রশ্ন করেন, আপনি কত টাকা বেতন পান? সুবীরের উত্তর, তিনি ৪৩ হাজার টাকা বেতন পান। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নির্দেশ, বেতনের এক তৃতীয়াংশ খোরপোষ হিসেবে দিতে হবে স্ত্রীকে। আর স্ত্রীকে বিচারপতির প্রশ্ন, আপনি কি স্বামী সুবীরের সঙ্গে থাকতে চান? তখনই স্ত্রী উত্তরে জানান, থাকতে পারি। কিন্তু আমাকে যেন মারধর করা না হয়। এই কথা শুনে বিচারপতি দম্পতিকে কাউন্সেলিংয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন।এখানেই শেষ নয়, বিএসএফ জওয়ান সুবীর মণ্ডলকে বিচারপতি দেবাংশু বসাক প্রশ্ন কনেন, এই চেহারায় কী করে বিএসএফের চাকরি পেলেন? আপনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আদালতে ডেকে পাঠাব। কেন আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হবে না? এইসব প্রশ্ন শুনে চমকে যান জওয়ান। তবে কোনও উত্তর দেননি। এখন দেখার কাউন্সেলিংয়ের পর একসঙ্গে তাঁরা বসবাস করতে পারেন কিনা।