গ্রামবাসীরা নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না! তাঁদের সামনে বসে যিনি চাটাই বুনছেন, তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার চাটাই বুনতে বুনতে মণ্ডলবাড়ির মেয়েদের তাঁর প্রশ্ন, ‘দুপুরের খাওয়া হয়েছে?’ দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে নমিতা মণ্ডল বললেন, ‘না দিদি, খাইনি। একটু পরে খাব। আপনি খাবেন?’ উত্তর এল, ‘খাব। দুপুরে এখনও খাইনি কিছু।’ বিস্ময়ে তখন গৃহবধূরা চোখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। নমিতা বললেন, ‘দিদি, আমাদের তো ভাত আর ট্যাংরা মাছের ঝোল হয়েছে। মোটা চালের ভাত আপনি খেতে পারবেন?’ মমতা বললেন, ‘কেন পারব না? খিদে পেয়েছে। দিন আমাকে খেতে!’ এবার সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্টিকার তৈরি করে পোস্ট করা হয়েছে। নীল রঙের ব্যাকগ্রাউন্ডে সেই পোস্টে লেখা, ‘ভাঙা চেয়ারে বসে মমতার মধ্যাহ্নভোজ। রেশনের চালের ভাত, ওল আর ট্যাংরা মাছ দেহাতিদের সঙ্গে জমিয়ে খেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ এই পোস্ট নিয়েই এবার আপত্তি উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে থেকেই।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? বুধবারের দুপুরে সবাই দেখলেন স্টিলের থালায় ভাত, ওল–ট্যাংরার ঝোল। তৃপ্তি সহকারে ‘মধ্যাহ্নভোজ’ সারলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যখন কলকাতার পথে তখনও নমিতা–কমলাদের ঘোর কাটেনি। মুখে তাঁদের একটাই কথা, ‘কোথায় মুখ্যমন্ত্রী! ইনি তো দিদির মতোই সব আপন করে নিলেন। আমরা এখনও ভাবতেই পারছি না।’ এসবের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট নিয়ে আপত্তি উঠেছে দলের অন্দর থেকেই। কারণ ওই পোস্টের তার নীচে লেখা, ‘তৃণমূল, আমার, আপনার, বাংলার।’ আর এই স্টিকার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
ঠিক কী বলেছে তৃণমূল কংগ্রেস? এই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘এই স্টিকার তৈরি এবং প্রকাশ কোনওটাই তৃণমূল কংগ্রেস করেনি। যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা দল অনুমোদন করে না। যে ছবি এবং ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে তাও দল অনুমোদন করে না। আমরা মনে করি এটা আসলে পরিকল্পনা করে নঞর্থক প্রচারের উদ্দেশে পরিকল্পনা করে করা হয়েছে।’