সম্প্রতি বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি গঠিত হয়েছে বঙ্গে। আর তারপর থেকেই দিকে দিকে ধিক ধিক করে বিদ্রোহ ও অসন্তোষের আগুন জ্বলতে শুরু করেছে দলের বিভিন্ন সদস্যদের মাঝে। বিধায়কদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া থেকে শুরু করে রাজ্য সদর দফতরের বাইরে বিজেপি কর্মীদের লাঠি হাতে ‘পাহাড়া’ দেওয়া। উঠে এসেছে নানা বিচিত্র ছবি। এই আবহেই সোমবার নতুন রাজ্য কমিটি ও জেলা সভাপতিদের নিয়ে কলকাতায় জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে বৈঠক করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ। এবং সেই বৈঠকে বিএল সন্তোষের স্পষ্ট বার্তা, ‘দল একটা নদীর মতো, এই স্রোতে কেউই চিরস্থায়ী নয়।’বিএল সন্তোষের ইঙ্গিত, বিজেপির নয়া কমিটিতে তিনি তারুণ্যের ঝাঁঝ চান। সৌমিত্র খাঁয়ের বদলে সম্প্রতি রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি করা হয়েছে ইন্দ্রনীল খাঁকে। তরুণ এই ডাক্তারের বয়স ৩২। তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তাঁর কমিটিতে যাতে কোনও ভাবে ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বের কোনও ব্যক্তি না থাকেন। আর বিজেপির মণ্ডল স্তরীয় কমিটিতে ৩০ বছরের কম বয়সীদেরই নেওয়া যাবে যুব মোর্চার কমিটিতে। এদিকে বিজেপির লক্ষ্য, রাজ্য স্তরের আন্দোলনের বদলে জেলা ও মণ্ডল স্তরে কর্মসূচি ও আন্দোলনের উপর বেশি জোর দেওয়া। আর এই কারণেই মণ্ডল সভাপতির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হল। নিচু স্তরে দল যাতে কর্মসূচিমুখী হয়, সেই লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, প্রবীণরা কি তাহলে বিজেপির কমিটিতে এবার থেকে ব্রাত্য? সন্তোষ জানান, সভাপতি পদ ছাড়া জেলা, মণ্ডল বা বুথ কমিটিতে বয়সের কোনও বিধিনিষেধ থাকবে না। তবে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ফল ভালো না হওয়ায় সংগঠন ঢেলে সাজাতে চাইছে বিজেপি। ‘নতুন রক্তের’সঞ্চার চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমন কি রাজ্য কমিটির গড় বয়সও অনেকটাই কম। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বয়স পঞ্চাশের আশেপাশে। রাজ্যে বিজেপির পাঁচ সাধারণ সম্পাদকেরও বয়স পঞ্চাশের নিচে। আন্দোলন জোরদার করতে অল্পবয়সিদের প্রাধান্য দেওয়াই এখন বিজেপির লক্ষ্য।