রাস্তা দিয়ে তখন তিনি হেঁটে ঢুকছেন। গন্তব্য তাঁর পীর আবু বক্কর সিদ্দিকির মাজার। এই মাজারে প্রবেশ করতে গিয়েই থমকে দাঁড়ালেন তিনি। আর তাকালেন সোজা। তাঁর চোখের সামনে তখন এক খাবার বিক্রেতা। পথ পাল্টে সোজা চলে গেলেন ওই দোকানির সামনে। কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সেই খাবার ঢেকে বিক্রি করার পরামর্শ দিলেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এই ছবি দেখা যায়, তাঁর ফুরফুরা শরিফে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেবার আগে। হেঁটে মাজারে প্রবেশ করার সময় দেখতে পান, রাস্তার ধারে মোরব্বা, দিলখুস–সহ নানারকম মিষ্টি খাবার বিক্রি করছেন এক ব্যক্তি।
ওই দোকানি মিষ্টি খাবার বিক্রি করলেও তা ঢাকা দেওয়া ছিল না। ফলে ধূলো–বালি থেকে শুরু করে মশা–মাছি বসতে পারে। যা খেয়ে সাধারণ মানুষের শরীর খারাপ হতে পারে। তাই ওখানের খাবার আঢাকা দেখতে পেয়ে খাবার ঢেকে রাখার জন্য সতর্ক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও হাসি মুখে তা মেনে নেন দোকানি। ‘দিদি’ সম্বোধন করে ওই দোকানি বলেন, ‘তাই করব দিদি। আপনি ঠিকই বলেছেন। আবার আসবেন দিদি আমার দোকানে।’ বাংলার দিদিও হাত নেড়ে তাঁকে সম্মতি জানালেন। আসলে এই মিষ্টি খাবার গ্রামেগঞ্জে খুব বিক্রি হয়। শিশু থেকে শুরু করে পুরুষ–মহিলা তা কিনে খান।
আরও পড়ুন: আড়াই মাস কেটে গেলেও রাজ্যের সিইও নিয়োগ হয়নি, বিজেপিকে তোপ তৃণমূলের
কিন্তু যদি খাবার ঢাকা না থাকে তাহলে জীবাণু স্পর্শ করতে পারে। যা খেলে পেটের নানা অসুখ করতে পারে। এমনকী হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়। তাই সোজা দোকানির কাছে চলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। নানা রঙের মোরব্বা, হালুয়া, গজা বিক্রি করা দোকানি মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে কী করবেন তখন বুঝতে পারছেন না। আসলে তাঁর দোকানে যে মুখ্যমন্ত্রী পা রাখবেন সেটা কল্পনাও করেননি দোকানি ইসমাইল মুফতি। মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মান জানাতে নানা উদ্যোগ যখন তিনি নিতে যাচ্ছেন তখন সুপরামর্শ দিয়ে গন্তব্যে এগিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওইটুকু সময়ের মধ্যেই দু’জনের মধ্যে সামান্য কথা হল। যা শেষ হল হাসি দিয়ে। ওই দোকানে ইসমাইল মুফতিকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা দিয়ে খাবার বিক্রি করুন। ধুলো উড়ছে মাছি বসছে। রমজানে ঈদ এবং নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে আবু বক্কর সিদ্দিকির মাজার–সহ ফুরফুরা শরিফের একাধিক জায়গায় বিক্রি হওয়া সেই খাবার খোলা অবস্থাতেই কেনাবেচা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি আনন্দ দিয়েছে। তাই ইসমাইল মুফতি সংবাদমাধ্যমে বললেন, ‘মোরব্বা খেতে চাননি চাইলে দিদিকে দিতাম। আমাকে বলল মাছি বসছে, চাপা দিন।’