ভাঙড়ের কলেজ মোড়ে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। নাকা চেকিং করার পাশাপাশি সেখানে ভাঙড় এবং কাশীপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী উপস্থিত ছিল। সুতরাং ওই পথে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। আর তাই সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি সওকত–আরাবুলকে। তখন গাড়ির সামনে রাস্তায় প্রথমে বসে পড়েন সওকত। আর পাশেই বসে পড়েন আরাবুল ইসলাম।
রাস্তায় বসে অবস্থান–বিক্ষোভ করতে শুরু করেন আরাবুল–সওকত।
আইন সকলের জন্য সমান। সেটা শাসক হোক বা বিরোধীপক্ষ। আইনের ব্যবহারে তাই কোনও বৈষম্য থাকে না। এবার সেই ছবিই দেখা গেল রাজ্য–রাজনীতিতে। ভাঙড়ে এখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের পর ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। তাই গতকাল নওশাদ সিদ্দিকীকে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। যেতে দেয়নি সেখানে। এবার ভাঙড় যাত্রা থমকে গেল আরাবুল ইসলাম এবং সওকত মোল্লা। এই দুই তৃণমূল কংগ্রেস নেতার মধ্যে একজন বিধায়কও। তাঁরা নিহত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর ভাঙড়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় আরাবুল–সওকতকে আটকে দেয় পুলিশ। বিষয়টি পছন্দ না হওয়ায় প্রতিবাদে রাস্তায় বসে অবস্থান–বিক্ষোভ করতে শুরু করেন আরাবুল–সওকত।
এদিকে পুলিশ পথ আটকালে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা এবং আরাবুল ইসলাম। ভাঙড়–২ ব্লকের ভোগালি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কাঁঠালিয়া এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী শেখ মোসলেম–এর মৃত্যু হয় নির্বাচনী সন্ত্রাসে। এই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেটা করা যাবে না বলে জানিয়ে দেন পুলিশ অফিসাররা। এমনকী একই আইনে নওশাদকে আটকানোর কথাও জানানো হয় তাঁদের। তখন যুক্তি দেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা যে, নওশাদ এলাকায় সন্ত্রাস করতে আসছিলেন। আর তাঁরা যাচ্ছেন পারলৌকিক কাজে। কিন্তু আইন সবার জন্য সমান তা জানিয়ে দেওয়া হয়।
ঠিক কী বলছেন বিধায়ক? অন্যদিকে এই ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা এবং আরাবুল ইসলাম। এই বিষয়ে বিধায়ক সওকত সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা শেষকৃত্যে যেতে চাইছিলাম। কিন্তু পুলিশ যেতে দিচ্ছে না। তাই এই বাধার বিরুদ্ধে এখানে বসে প্রতিবাদ করছি। নিহত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আমরা না গেলে শেষকৃত্য করবে না। কিন্তু এই পরিস্থিতির কথা বলে বুঝিয়ে ওদের শেষকৃত্যের কাজে পাঠিয়ে দিয়েছি। আইএসএফ তো আমাদের উপর হামলা করেছে। পুলিশকে গুলি করেছে। তৃণমূল তো এসব করেনি। আমরা তো ভাঙড়ে সভা করতে যাচ্ছি না। দলীয় কর্মীর শেষকৃত্যে গেলে সমস্যা কোথায়?’
তারপর ঠিক কী ঘটল? ভাঙড়ের কলেজ মোড়ে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। নাকা চেকিং করার পাশাপাশি সেখানে ভাঙড় এবং কাশীপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী উপস্থিত ছিল। সুতরাং ওই পথে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। আর তাই সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি সওকত–আরাবুলকে। তখন গাড়ির সামনে রাস্তায় প্রথমে বসে পড়েন সওকত। আর পাশেই বসে পড়েন আরাবুল ইসলাম। তাঁদের ডাকে বাকি কর্মীরাও রাস্তায় বসে পড়েন। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘আইন সকলের জন্য এক। আমি আবার ভাঙড়ে যাব। দেখি কী করে আমায় আটকায়।’