১১ বছরের এক নাবালকের হাতে রয়েছে রাইফেল। সেই ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হতেই তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। আসলে ছবিতে যাকে মিলেছে, সে আর কেউ নয় তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিংয়ের নাতি। নাবালকের হাতে থাকা সেই রাইফেলের ছবি বৃহস্পতিবার সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল শিল্পাঞ্চলে। ঘটনায় নড়ে বসেছে প্রশাসন। তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। (আরও পড়ুন: ২৬-এর ভোটের আগে এবার বাংলায় ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রস্তুতি নির্বাচন কমিশনের)
আরও পড়ুন: তৃণমূলের মহিলা কাউন্সিলরকে হেনস্তা, প্রাণনাশের হুমকি দলেরই কর্মীর, আতঙ্কে নেত্রী
ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, চোখে কালো চশমা পরে বিছানায় বসে রয়েছে ওই নাবালক। তার হাতে একটি কালো রঙের অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। জানা গিয়েছে, ওই ছবি সে নিজেই নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করে। এরপরই মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায়। (আরও পড়ুন: শওকত মোল্লা ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা খুন, আঙুল সরাসরি ভাঙড়ের বিধয়াকের দিকে)
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠেছে নাবালকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র কীভাবে এল? এটা কি বাড়ির কারও লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক, না কি অন্য কিছু? তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিং ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তাঁর নিজের নামে একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। বহুদিন আগে তাঁর নাতি সেই বন্দুক হাতে ছবি তুলেছিল। তবে বাড়িতে তিনি তখন ছিলেন না। নাতি অতিরিক্ত উৎসাহে সেই পুরনো ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ফেলেছে বলে দাবি তাঁর। বিধায়ক আশ্বাস দেন, নাতিকে এ নিয়ে সতর্ক করা হবে। তাঁর কথায়, ছোট ছেলে, বুঝে না। কিন্তু ভবিষ্যতে যাতে এমন না করে, সে ব্যাপারে কড়া নজর রাখা হবে। (আরও পড়ুন: দিলীপের পাশাপাশি দিল্লিতে শমীক, গেলেন দশম রাজ্য সভাপতিও)
কিন্তু বিধায়কের এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ বিরোধীরা। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল কড়া সমালোচনা করে বলেন, এই ছবিটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। এটা তৃণমূল আমদানি করেছে। এত ছোট ছেলের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়ে ওরা ভবিষ্যতের আর এক মনোজিৎ মিশ্র তৈরি করতে চাইছেন কি?তিনি আরও বলেন, বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকতেই পারে, কিন্তু সেটি নাবালকের হাতে তুলে দিয়ে ছবি তোলা ও তা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একেবারেই অনুচিত। এর মধ্যে একটা বিপজ্জনক মানসিকতা কাজ করছে।
এদিকে আগ্নেয়াস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, ছবিতে দেখা বন্দুকটি একটি হ্যান্ডমেড সোফিস্টিকেটেড .৩০৩ রাইফেল। এটি পাঁচ রাউন্ড অ্যামিউনিশন-সহ সেলফ লোডেড মডেল। সাধারণত এই ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র মুঙ্গের বা ঔরঙ্গাবাদ অঞ্চলে তৈরি হয়। যদিও বিধায়ক নিজে তাঁর আগ্নেয়াস্ত্রের নির্দিষ্ট মডেল জানাতে পারেননি। এই ঘটনায় একদিকে যেমন শিশু সুরক্ষা ও আগ্নেয়াস্ত্র আইনের প্রশ্ন উঠেছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে আরও উত্তপ্ত হয়েছে আসানসোলের পরিস্থিতি।